হত্যা করার অধিকার কারোর নেই
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, 3:57 PM

NL24 News
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, 3:57 PM

হত্যা করার অধিকার কারোর নেই
মোরশেদ আলম, গনমাধ্যমকর্মী : - আমাদের সমাজে সহিংসতা কখনোই কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। একজন মানুষ অন্য একজন মানুষকে গুলি করে হত্যা করতে পারে না—এটি শুধু নৈতিক ও আইনগত দিক থেকেই নয়, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য।
প্রথমত, আইনের দৃষ্টিতে হত্যাকাণ্ড একটি গুরুতর অপরাধ। যে কেউ যদি অন্য কাউকে গুলি করে হত্যা করে, তবে সে শাস্তির আওতায় আসবে। প্রতিটি রাষ্ট্রেই এই ধরনের অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান এবং দণ্ডবিধি অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করা গুরুতর অপরাধ এবং এর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, নৈতিকভাবে কেউ কাউকে হত্যা করতে পারে না। একজন মানুষের জীবন কেড়ে নেওয়ার অধিকার আরেকজনের নেই। প্রতিটি মানুষ স্রষ্টা প্রদত্ত নিজেই নিজের মালিক। সমাজে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই রাষ্ট্রীয় আইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যক্তিগত প্রতিশোধ বা রাগের বসে কাউকে হত্যা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তৃতীয়ত, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে, জীবন সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। একবার হারিয়ে গেলে তা আর ফিরে আসে না। আমাদের উচিত সংঘাতের পরিবর্তে সংলাপকে গুরুত্ব দেওয়া, হিংসার পরিবর্তে মানবিকতা ও সহমর্মিতার চর্চা করা।
কিয়ামতের দিনে হত্যাকারীর জন্য কঠিন শাস্তি হবে তা স্পষ্ট আছে।
> "প্রথম যে বিষয়ের বিচার কিয়ামতের দিনে মানুষের মধ্যে করা হবে, তা হলো রক্তপাত (হত্যা) সম্পর্কিত বিচার।" (বুখারি, হাদিস নং ৬৮৫৫; মুসলিম, হাদিস নং ১৬৭৮)।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে এটি সুস্পষ্ট যে, কেউ কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করতে পারে না। এটি কঠোর হারাম এবং কিয়ামতের দিনে এর জন্য কঠোর শাস্তি অপেক্ষা করছে। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান, এবং এটি সংরক্ষণ করা সকলের দায়িত্ব। সমাজে ন্যায়বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলাম শান্তির শিক্ষা দিয়েছে, সহিংসতার নয়।
পরিশেষে একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে হলে আমাদের অস্ত্রের ভাষা নয়, ভালোবাসা ও আইন-কানুনের পথেই সমাধান খুঁজতে হবে। কেউ কাউকে গুলি করে হত্যা করতে পারে না—এটি শুধু একটি আইনগত বা নৈতিক বক্তব্য নয়, বরং একটি সভ্য সমাজের মূল ভিত্তি।