মেয়র আতিক মহোদয়, ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আপনার জোড় বিজোড় থিওরি কোনভাবেই কাজ করবে না
২৮ মার্চ, ২০২২, 5:39 AM

NL24 News
২৮ মার্চ, ২০২২, 5:39 AM

মেয়র আতিক মহোদয়, ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আপনার জোড় বিজোড় থিওরি কোনভাবেই কাজ করবে না
নজরুল ইসলাম ll এত জঞ্জাল অব্যবস্থাপনার মধ্যে এই থিওরী কেমন করে কাজ করবে বলেন তো। ঢাকা শহরের রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে মাননীয় মেয়র আতিক বলেছেন, ঢাকায় জোড় সংখ্যার গাড়ি জোড় তারিখে, বিজোড় বিজোড় তারিখে চলবে। কখনো দায়িত্ব পেলে এটা তিনি করবেন।
এই এই পদ্ধতি চায়নাতে কিছু শহরে আছে। সেখানে আইনের প্রতি মানুষের যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে। সেখানে রাষ্ট্রীয় আইন অমান্যকারীদের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে এসে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। বিজোড় সংখ্যার গাড়ি যদি জোড় তারিখে রাস্তায় নেমে আসে ড্রাইভার তার ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে ১২ পয়েন্ট হারাবে। As a result ড্রাইভিং লাইসেন্স যায় যায় অবস্থা। এতে করে পরবর্তী অপরাধ সম্পাদন করার পূর্বে ড্রাইভারের মধ্যে ভীতি কাজ করবে। আমাদের দেশে আইন কানুন আছে, কিন্তু আমরা কি যথাযথভাবে আইন মেনে চলি?
আমার কাছে মনে হয়েছে মাননীয় মেয়র আতিক সামান্যতম স্টাডি না করে চট করে একটি থিওরির কথা বলে ফেলেছেন। দেখেন, শুরুতেই ঢাকা শহরে এই থিওরি কাজ করবে না। হয়তো একদিন কাজ করবে, এর জন্য একটা যুগোপযোগী রোড হাইওয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন দরকার।
ট্রান্সপোর্ট ফর বাংলাদেশ চালু করার পরিকল্পনা করুন। যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার নাইন্টি পার্সেন্ট সরকারি তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসেন। প্রাইভেট সেক্টরকে সীমিত করেন। সরকারী বাস পরিবহন সারা ঢাকা শহর জুড়ে চলবে। যদি একটি সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারেন তাহলে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে না ,
ট্রান্সপোর্ট ফর বাংলাদেশ, থেকে যে ইনকাম আসবে তাতে করে দেশের গড় প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে।
উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিকে ইমপ্লিমেন্ট করতে হলে কর্তা ব্যক্তিদেরকে সর্ব প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হল বাংলাদেশ ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপনাকে একটি ইউনিক সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। ইহা বাস্তবায়ন করতে হলে সর্বপ্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হল -
গাড়ি
গাড়ির মালিক
ড্রাইভার এবং
ড্রাইভার লাইসেন্স
এই বিষয়গুলো একটি ইউনিক ওয়েব পোর্টাল সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যাতে করে ড্রাইভার লাইসেন্স নাম্বার, গাড়ির নাম্বার এন্টার করার পর গাড়ির মালিক ড্রাইভার প্রয়োজনীয় ইনফর্মেশন কম্পিউটার স্ক্রিনের মধ্যে চলে আসে। উল্লেখিত বিষয়গুলোর সুরাহা যতদিন পর্যন্ত না করতে পারছেন ততদিন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমকে আধুনিকায়ন করার যে পরিকল্পনা সেটা শুরুতেই হোঁচট খাবে, ভেস্তে যাবে। এগুলো দিয়ে শুরু করতে হবে, এছাড়া আরো অনেক বিষয় আছে যা পর্যায়ক্রমে আসবে।
সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করেন, পরিকল্পনাকে রিভিউ করেন, এমন একটি দেশ খুঁজে বার করুন যে দেশের ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত চমৎকার যুগোপযোগী, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেই ব্যবস্থাপনাকে আমলে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
বছরপূর্বে বাংলাদেশের ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের আধুনিকায়নে একটি আর্টিকেল লিখেছিলাম। বাংলাদেশ ট্রান্সপোর্ট মন্ত্রণালয়ে লেখাটি ইমেইলে প্রেরণ করেছিলাম- Unfortunately নো রেসপন্স নো রিপ্লাই!
আমাদের অনেক গুলো সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমস্যা হল আমাদের আমাদের কাস্টমার সার্ভিস, যা below এভারেজ। বহির্বিশ্বে যেমন ধরেন যুক্তরাজ্যে, আপনি যদি প্রধানমন্ত্রীকে একটা ই'মেইল করেন রাত্রে বারোটায়, প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হবে দুঃখিত মিস্টার ইসলাম সাথে সাথে আপনাকে রিপ্লাই করতে পারি নাই। আমরা ঘুম থেকে উঠে আপনার ইমেইল রিপ্লাই করব- Unfortunately আমাদের দেশে এই রেওয়াজ নেই।
বাংলাদেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার যুগোপযোগী মানোন্নয়নে সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার প্রয়োজন।
লেখক: জার্নালিস্ট, ওয়ার্কিং ফর ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) লন্ডন। মেম্বার, দ্য ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটি ইউনাইটেড কিংডম।