ঢাকা ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
জোর যায় মুল্লুক তার, এই নীতিতে যদি আমরা দেশ সংস্কার করি তাঁতে দেশ গৃহযোদ্ধের দিকে ধাপিত হতে পারে। লন্ডনে আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের গ্রান্ড মীলাদুন্নবী কনফারেন্স অনুষ্ঠিত Shahriar Kabir arrested in Dhaka, conspicuous charges ক্ষমতার দখল নিয়ে জামায়াত ও বিএনপির লড়াই তুঙ্গে ইউনুস মাঝির মৃত্যুতে শিল্প এলাকা ক্রীড়া পরিষদের শোক চট্টগ্রামে অস্ত্রের খুঁজে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ঘরে তল্লাশি, মারধর পটিয়ায় কেলিশহর আর্বাণ কো অপারেটিভের নির্বাচনে সভাপতি আশীষ দে, সম্পাদক রূপন কুমার দে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু চিকিৎসাধীন দুই নারীর মৃত্যু প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন মাতারবাড়ীর ব্যবসায়ী সেলিম উল্লাহ সেলিম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা

ক্ষমতার দখল নিয়ে জামায়াত ও বিএনপির লড়াই তুঙ্গে

#

নিজস্ব সংবাদদাতা

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪,  3:23 AM

news image


হাসান আহমদ : প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার এক মাস পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই।  শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের ‘হাতের পুতুল’ বানাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত-ই- ইসলামী। বিএনপির উদ্দেশ্য, আওয়ামী লীগের ফেলে যাওয়া সাম্রাজ্যে একক আধিপত্য বিস্তার। তাই তৃণমূলস্তর থেকেই বিএনপি নেতারা ব্যাপক দুর্নীতি শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠছে। অন্যদিকে, জামায়াতের উদ্দেশ্য ‘বৃহত্তর ইসলামী জোট গঠন’। ইসলামী ও সমমনা দলগুলো নিয়ে একটি বৃহত্তর জোট গঠন করে তারা বিএনপির মোকাবেলা করতে চায়। সেই জোটে কট্টর জঙ্গিবাদীদেরও রাখতে চান জামায়াত নেতারা। এই দুই দলের টানাপোড়েনের মাঝে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের হুমকি, ‘আমরা এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি, অন্য ফ্যাসিস্টকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য নয়। কেউ যদি এখনো সয়নে-স্বপনে কিংবা ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে আবারও ছাত্র-জনতাকে ডমিনেট করে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবে, তারা যেন ওই শেখ হাসিনাকে দেখে শিক্ষা নেয়।’

শেখ হাসিনার বিদায়ের পর বাংলাদেশে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অপরাধীরা। জঙ্গিরাও আজ মুক্ত। ‘শান্তি শৃঙ্খলা এবং জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’র কারণে ২০০৯ সালে হিযবুত তাহ্‌রীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ সরকার। ‘ইসলামি খিলাফত’-এর দাবিদার এই সংগঠনটি আরব দেশ, জার্মানি, তুরস্ক, পাকিস্তান ও যুক্তরাজ্যেও নিষিদ্ধ। কিন্তু তারা এখন প্রকাশ্যে মিছিল-মিটিং করছে।  জামায়াতের প্রশ্রয়ে ইসলামী সংগঠনগুলি সংখ্যালঘুদের হুমকির কারণ হয়ে উঠেছে। বিএনপিকে নিয়ে আতঙ্ক ব্যাপক চাঁদাবাজির। দুই ‘বন্ধু’ দলের মধ্যে লড়াই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বিএনপি ও জামায়াতের এই ‘ঠান্ডা লড়াইটাই স্বাভাবিক’ বলে মনে করেন ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘বিএনপি জামায়াতের সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ ভোট হলে বিএনপির মুল প্রতিদ্বন্দ্বী দল হবে জামায়াত। জামায়াত প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উত্থিত হবে। এর আগের অনেক নির্বাচনে বেশ কিছু সিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে বিএনপি আর জামায়াতের মধ্যে। হয় জামায়াত প্রথম অথবা বিএনপি প্রথম। আওয়ামী লীগ তৃতীয় দল। দল হিসেবে প্রধান বিরোধী দল হওয়াটা জামায়াতের জন্য আকর্ষণীয়। নির্বাচনী এই বাস্তবতার কারণেই জামায়াত বিএনপি ঐক্য আর মনে হয় সম্ভব না। আমাদের জন্য ভালো। জাফর ইকবাল বলতো সরকারি আর বিরোধী দল উভয়েই হোক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। আমরা চাই সরকার আর বিরোধী দল উভয়েই হোক ভারতীয় আগ্রাসনের বিরোধী’।

বিএনপি ও জামায়াতের বিরোধ বিভিন্ন সরকারি উচ্চপদে নিয়োগ নিয়েও রয়েছে। দেখা গিয়েছে জামায়াতপন্থীরাই বেশিরভাগ শীর্ষপদ দখল করে নিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলামের বদলে বসানো হয়েছে জামায়াতের পছন্দের অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানকে। জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি তুললেও বিএনপি প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবেন না বলে ৩ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করেন জামায়াতের আমির। কিন্তু সেটা মানতে নারাজ বিএনপি। তারা চায় আওয়ামী লীগ দলটাকেই চিরতরে মুছে ফেলতে। জামায়াতের পরামর্শে প্রথমবারের মতো  দূর্গাপূজার মণ্ডপগুলির বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজে যেন নামাজের ব্যাঘাত না ঘটে সেবিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।  স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর মণ্ডপের সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার হতে পারে।  প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জানিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের দুর্গা পুজোর জন্য সরকার ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। দুর্গা পুজো নিয়ে বিএনপির মাথাব্যাথা না থাকলেও জামায়াত হিন্দুদের উৎসবের মরশুমেও ইসলামী প্রচারনা বাড়িয়ে চলেছে। সমমনোভাবাপন্ন দলগুলিকে নিয়ে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠাই তাদের লক্ষ্য। তাই হুটোপাটা করে নির্বাচন চাইছে না জামায়াত।

তারা মুখে বললেও বিরোধ বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে দেশজুড়ে চাঁদাবাজি। যেমন, নওগাঁর পোরশা উপজেলায় তৌফিক শাহ চৌধুরী নামের এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুসহ ১৩ জন কৃষকের ৫৬ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। আবার সিলেটে চিনি চোরাচালান সিন্ডিকেট এখন যুবদল-ছাত্রদলের ‘নিয়ন্ত্রণে’। মুন্সিগঞ্জ লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ফেরিঘাট, মাছঘাট ও ট্রলারঘাট দখলে নিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। দুই দলই নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে এলাকা দখলে ব্যস্ত। জামায়াত ব্যস্ত দেশের রাজনীতিকে ইসলামীকরণে। আর  বিএনপির সর্বস্তরের নেতারা পেতে চাইছেন প্রথম থেকেই আর্থিক ক্ষমতার স্বাদ।  বিপাকে শুধু সাধারণ মানুষ।


মানবাধিকার কর্মী

logo

সম্পাদক : হেফাজুল করিম রকিব

নির্বাহী সম্পাদক : শাহ এম রহমান বেলাল