ইতিমধ্যে ওরশ শরীফে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লাখো ভক্তরা আসতে শুরু করেছে। পহেলা মাঘ ওরশের দিন আমির ভান্ডার দরবার শরীফসহ আশেপাশের গ্রাম গুলোতে আতœীয় স্বজনের আগমনে মিলন মেলায় পরিনত হয়। হযরত আমিরুল আউলিয়া খ্যাত “কালাসোনা” লক্ববধারী সৈয়দ শাহ আমিরুজ্জামান শাহ সাহেব কেবলার ফয়েজ-রহমত বরকতে বিশ্বাসী ভক্তগন প্রেম-ভক্তি ও সাধ্যের অনুকুলে দলে দলে তারা আসতে শুরু করেছে। মুর্শিদ চরণে করুণা প্রত্যাশী হয়ে। পথ-প্রান্তর জেন মওলার প্রেমে সিক্ত। এ ওরশ কে ঘিরে ২ কিঃ মিঃ এলাকা জুরে গড়ে উঠেছে দুই হাজার মত ছোট খাট দোকান পার্টস। ওরশের দিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তবৃন্দদের নিয়ে আশা গাড়ির গুলো পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পার্কিং করার জন্য দরবারে পক্ষ থেকে ভক্তবৃন্দদের অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায, আমিরুল আউলিয়া হয়রত সৈয়দ আমিরুজ্জামান শাহ (রঃ) হচ্ছেন পটিয়া পৌর সদরে ৯নং ওয়ার্ড গোবিন্দার খীল গ্রামের প্রখ্যাত ধমর্ প্রাণ মহাপুরুষ হযরত মওলা চাঁদ (রঃ)্ এর পবিত্র ঔরসজাত সন্তান। তিনি ১ লা চৈত্র ১২৫২বাংলা, ১২ই জিলকদ ১২৬৫ হিজরী ১৮৪৫ সালে বৃহস্পতিবারে এ গ্রামে জন্মলাভ করেন। তিনি কোঠর,ত্যাগ তিতিক্ষ,রেয়াজত ও সাধনার মাধ্যমে ¯্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ ও তরিকায়ে মাইজ ভান্ডারী প্রতিষ্ঠাতা হযরত গাউছুল আজম শাহ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডরী (কঃ) এর অন্যতম প্রধান খলিফা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে ছিলেন। ১৯২৭ সালে তিনি পরলোক গমন করলেও আজও লোক মুখে বেঁচে আছে তাঁর অসংখ্য কেরামতের কাহিনী।
হয়রত আমিরুজ্জামান শাহ(রঃ) এর তিন বিবি’র ৬ সন্তানের হলেন ১) হয়রত মাওলানা মোহাম্মদ সোলায়মান শাহ (র:), ২) হয়রত মাওলানা খলিলুর রহমান শাহ (র:) ৩) হয়রত মাওলানা হাবিবুর রহমান শাহ (র:) ৪) হয়রত মাওলানা ডা: মোজাহেরুল হক শাহ (র:), ৫) হয়রত মাওলানা মাছুম সৈয়দ মোহাম্মদ লোকমান হাকিম শাহ (র:), ৬) হয়রত মাওলানা হারুন রসিদ শাহ (র:) এদের মধ্যে কেউ বেচে নেই।
হয়রত সৈয়দ আমিরুজ্জামান শাহ (রঃ) প্রথম পুত্র হয়রত মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ সোলায়মান শাহ (র:) এর সন্তানেরা হলেন হয়রত শাহসূফী সৈয়দ মোহাম্মদ নুরুল হক শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্মদ হাছনাত করিম মুছা শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্মদ ইলিয়াছ শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্মদ ডা: খাইরুল বশর শাহ্ আমিরী। ২য় পুত্র হয়রত মাওলানা খলিলুর রহমান শাহ (র:) এর সন্তানেরা হলেন, শাহসূফি সৈয়দ মোহাম্মদ আবু ছৈয়দ শাহ (রা:), সৈয়দ মোহম্মদ আবু ইউছুফ শাহ (রা), সৈয়দ মোহাম্মদ সিরাজুল হক শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্মদ শাহ আলম শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্মদ আমিরুল মোস্তাফা শাহ (রা:)। ৩য় পুত্র হয়রত মাওলানা হাবিবুর রহমান শাহ (র:) এর একমাত্র সন্তান শাহসূফি সৈয়দ মোহাম্মদ নুরুল আলম শাহ (রা:)। ৪র্থ পুত্র হয়রত মাওলানা ডা: মোজাহেরুল হক শাহ (র:) এর সন্তানেরা হলেন, শাহসূফি সৈয়দ মোহাম্মদ ফৌজুল আজিম শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্ম ফৌজুল কবির শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্মদ মীর কাসেম শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্মদ মীর হোসাইন শাহ (রা:), সৈয়দ মোহাম্মদ আমির হোসাইন শাহ আমিরী, সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল হোসাইন শাহ আমিরী। ৬ষ্ঠ পুত্র হয়রত মাওলানা হারুন রসিদ শাহ (র:) এর সন্তানেরা হলেন শাহসূফি সৈয়দ মোহাম্মদ মামুন রসিদ শাহ আমিরী, সৈয়দ মোহাম্মদ কানুন রসিদ শাহ আমিরী, শামুন রসিদ শাহ আমিরী, মাহাবু রসিদ শাহ আমিরী, মনজুর রসিদ শাহ আমিরী, আমির খসরু শাহ আমিরী, আছরার-ই-শাহ আমিরী, ছরওয়ার কামেল শাহ আমিরী। আর অন্যান্য ওয়ারিশগন বর্তমানে দরবারে কেতমতে নিয়োজিত রয়েছেন।
এ মহান সাধকের নামে বেশকিছু প্রতিষ্টান নির্মিত হয়েছে। তৎমধ্যে পটিয়া আমিরুল আউলিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রসা, আমিরভান্ডার সোলাইমানীয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা, শাহ আমির উচ্চ বিদ্যালয়, শাহ আমির প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহ আমির কিন্ডার গার্টেন, পটিয়া শাহ আমির বশরিয়া এতিমখানা, আমিরীয়া মল্লবাড়ী জামে মসজিদ, আমিরুল আউলিয়া রহমানীয়া জামে মসজিদ, আমির ভান্ডার কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরী, খাসখামা আমিরুল আউলিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা (আনোয়ারা), গাউছিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা (কুমিরা)।
আমির ভান্ডার শরীফ নামে প্রতিষ্ঠিত তাঁর স্মৃতিগাতা এদেশের অধ্যাত-সাংস্কতিক জগতে দ্বিতীয় বৃহত্তম দরবার পরিগণিত। প্রতি বছর পহেলা ১লা মাঘ তাঁর এ দরবারে পবিত্র বার্ষিক ওরশ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়।
আমির ভান্ডার দরবারে পীর শাহ্সূফী সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদুল আবছার (ম.) বলেন, হয়রত গাউছুল আজম মাইজভান্ডারির অন্যতম খলীফা সৈয়দ আমিরুজ্জমান শাহ্(ক.)’র আমিরুল আউলিয়া ১৫ জানুয়ারী ওরশ শরীফ উপলক্ষে পটিয়ার আমির ভান্ডার দরবার শরিফে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে লক্ষ, লক্ষ ,ভক্ত ,আশেকান ও মুরিদানদের সমাবেশ ঘটে।
শাহসূফী সৈয়দ মুহাম্মদ শামুন রশিদ শাহ আমিরী বলেন, প্রতিবছর পহেলা মাঘ মুর্শিদ কেবলা হয়রত সৈয়দ শাহ আমিরুজ্জমান (রা:) এর বার্ষিক ওরশ শরীফকে ঘিরে দেশের প্রত্যটা অঞ্চল থেকে লাখো ভক্তবৃন্দে মিলন মেলা হয়। এতে সারাদিন খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল, মাহফিলে ছেমা, জেয়ারত, বিশ্বে মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়।