ঢাকা ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
দক্ষিণ ভূর্ষি শীতলা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাঞ্চন নাথ, সম্পাদক সুমন দেবনাথ “টাইফয়েড এখনো মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা"—সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম “টাইফয়েড এখনো মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা"—সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উত্তেজনা: ছাত্রদল কমিটিতে ‘শিবির সংশ্লিষ্টতার' অভিযোগ পটিয়ায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করতে সমন্বয় সভা পটিয়ায় ভূমি অফিসে দালালবিরোধী অভিযান, এক যুবকের সাজা ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৪২ পটিয়ায় একই দিনে অজ্ঞান পার্টির প্রতারণা ও দরজা কেটে ১৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে স্বর্ণালংকার- নগদ টাকা হারালেন বৃদ্ধা পটিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় দুই চুরি, এক আত্মহত্যা : চরম উৎকন্ঠায় স্থানীয়রা

৫ ছেলের সারি সারি লাশ, কাঁদছেন মা

#

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২,  10:32 AM

news image
লুটিয়ে পড়ে ডুকরে কাঁদছেন হতভাগী মা

নিজস্ব প্রতিনিধি : কক্সবাজারের চকরিয়াস্থ মালুমঘাট এলাকার মৃত সুরেশ শীলের বাড়িতে মঙ্গলবার দুপুরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ডুকরে কাঁদছেন হতভাগী মা।

স্বামী ও পাঁচ সন্তানকে হারিয়ে ষাটোর্ধ মিনু রাণীকে দেখলে যে কারো চোখে অঝোরে পানি ঝরবে। সব হারিয়ে মিনু রাণী অনেকটা পাগল। তার আর্তনাদ থামাতে পারছেন না কেউ।

উঠানে সারি করে রাখা ছেলে অনুপম শীল, নিরুপম শীল, দীপক শীল, চম্পক শীল ও স্মরণ শীলের লাশ। কিছুক্ষণ পর পর তাদের জড়িয়ে ধরছেন মা মিনু রাণী। ক্ষণে ক্ষণেই আর্তনাদ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ডুকরে কাঁদছেন সেই হতভাগী মা।

ছেলেদের লাশ দেখে মা মিনু রানী শীল আর্তনাদ করে বলছিলেন, যাদের মানুষ করেছি, তাদের নিয়ে গেছে। কাদের জন্য বাঁচব।

প্রতিবেশীরা তাদের সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি ছিলেন মুসলিমরাও। পাঁচ ভাইয়ের এমন করুণ মৃত্যুতে হতবিহবল সবাই।

কক্সবাজারের চকরিয়াস্থ মালুমঘাট এলাকার সুরেশ শীলের বাড়িতে বিরাজ করছে কল্পানাহীন পরিবেশ। স্বজন কিংবা আপনজন হারানোর কী বেদনা তা ওই বাড়িতে যারা গিয়েছে তাদের বুঝতে কষ্ট হবে না।

সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ১০ দিন আগে মিনু রানীর স্বামী সুরেশ শীলের মৃত্যু হয়। জীবন সঙ্গীকে হারিয়ে বৃদ্ধ বয়সে ছেলে-মেয়ে, নাতি নাতনি ও আপনজনদের নিয়ে কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছিলেন মিনু রাণী। স্বামীর মৃত্যুর কারণে সব আপনজনও প্রায় পাশে ছিল।

কিন্তু মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার ডুলাহাজারা মালুমঘাট খ্রিস্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালসংলগ্ন হাসিনাপাড়ায় মিনুর স্বাভাবিক চলার গতিপথকে স্তব্ধ করে দেয় দ্রুতগামী একটি ঘাতক ডাম্পার (মিনি ট্রাক)।

স্থানীয় সংবাদকর্মী এম আর মাহাবুব বলেন, ১০ দিন আগে মিনু রাণীর স্বামী সুরেশ শীল পরলোকগমন করেন। যে কারণে তাদের পরিবার পরিজনদের মঙ্গলবার ছিল শুদ্ধিস্নান। আর পরেরদিন হওয়ার কথা ছিল ক্রিয়ানুষ্ঠান। কিন্তু শুদ্ধিস্নানের দিনেই শ্মশান থেকে ফেরার পথে ঘাতক পিকআপ (ডাম্পার) কেড়ে নেয় মিনু রাণীর পাঁচ সন্তানের প্রাণ। সঙ্গে ছিল আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তারাও আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

তাকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না উপস্থিত লোকজন। কারণ একটা বলে সন্তানা দিলে আরেকটা প্রশ্ন ছুড়ে দেয় মিনু রাণী। উঠানে পাঁচ লাশের পাশে তাদের স্ত্রীরা বিলাপ করছেন। ডুকরে কাঁদছে তাদের ছেলে-মেয়েরাও।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। পাঁচ ভাইয়ের সৎকারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই কেঁদেছে।

logo

প্রধান সম্পাদক : হেফাজুল করিম রকিব

সম্পাদক : নূরুন্নবী আলী