স্ত্রী ও ছেলের হাতে নিহত ইব্রাহিমের ভাই চার্জশিটে সন্তুষ্ট নয়, পুনঃতদন্ত ও বাদী পরিবর্তনের দাবী
০৫ জুন, ২০২৩, 5:01 PM

NL24 News
০৫ জুন, ২০২৩, 5:01 PM

স্ত্রী ও ছেলের হাতে নিহত ইব্রাহিমের ভাই চার্জশিটে সন্তুষ্ট নয়, পুনঃতদন্ত ও বাদী পরিবর্তনের দাবী
কক্সবাজার অফিস
স্ত্রী ও ছেলের হাতে নির্মম নিষ্ঠুর ভাবে নিহত ইব্রাহিমের ভাই সন্তুষ্ট নন পুলিশের দেয়া চার্জশিট দেখে।তিনি চান সিআইডি বা পিআইডির মাধ্যমে পূনঃ তদন্ত।
কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে আলোচিত ২০২২ সালে সেপ্টেম্বরে হত্যাকান্ডটি সংগঠিত হয় পেকুয়ার মগনামার ৫ নং ওয়ার্ডের দরদরিয়া ঘোনা গ্রামে। ছেলে - স্ত্রীর এলোপাতাড়ি দায়ের কোপে নিহত হন জানে আলমের পুত্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইব্রাহিম( ৫০)।
মামলার বাদী ও প্রধান স্বাক্ষী নিহতের ছোট ভাই আজম খলিল জানান,ভাই হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে, তিনি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হত্যা মামলার বাদী হতে গিয়ে পড়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ প্রভাবশালীদের রোষানলে।
প্রতিনিয়ত তদন্তকারী কর্মকর্তা পেকুয়া থানার এস আই এ হাসেম মামলার বাদী আজম খলিল ও তার চাচাত ভাই আলমগীর মেম্বার কে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ঘটনার বিবরণে জানাযায়, গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৭ টায় নিহত ইব্রাহিম ঘুম থেকে উঠে পেকুয়া বাজারে তার হার্ডওয়্যার দোকানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, এমন সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইব্রাহিমকে স্ত্রী ভেলুয়া বেগম ও ছেলে ইসমাইল মিলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জহম করে । টেলিফোনে চট্রগ্রাম থেকে মা ও ভাইকে মারার কথা বলছিলেন মেজো মেয়ে এস্তেফা বেগম।কোপানোর জন্য দা এনে ভেলুয়ার হাতে দেয় তার মামাতবোন পার্শ্বের বাড়ির জনৈক সাদিয়া বেগম।ওই দা দিয়ে স্বামী ইব্রাহিমের মাথায় সজোরে কোপ দেয়, এর পর ছেলে ইসমাইল এসে দা দিয়ে আবারো তার বাবাকে কোপাতে থাকে। শোর চিৎকার শুনে ভাই আজম খলিল ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় পেকুয়া বাজারের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে নিয়ে য়াওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।সেখানে টানা ১১ দিন মৃত্যুর পাথে যুদ্ধ করে অবশেষে ১০ অক্টোবর মারা যান মোহাম্মদ ইব্রাহিম। মৃত্যুর আগে গত বছর ৫ অক্টোবর ইব্রাহিম বাদী হয়ে ছেলে ইসমাইল ও স্ত্রী ভেলুয়াসহ পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে একটি এজাহার প্রেরণ করেন ভাই আজম খলিল মারফত। অবশ্য মৃত্যুর আগে কে কিভাবে তাকে কুপিয়েছে, কে দা এনে দিয়েছে এবং কে টেলিফোনে তাকে মারার নির্দেশ দিয়েছে সব বলে গেছেন। বাদী মারা গেলে আজম খলিল বাদী হয়ে মামলা পরিচালনা করার জন্য থানায় লিখিত ভাবে জানান।এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা এ হাসেম, আজম খলিলকে আদালতের শরণাপন্ন হতে বলেন,যথারীতি তিনি আদালতের মাধ্যমে ভাই হত্যা মামলার ন্যায় বিচারের স্বার্থে বাদী পরিবর্তনের আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন গ্রহন করেন।
চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে সিআইডি বা পিআইডি কে তদন্তের দায়িত্ব দেয়ার জন্য ও গত ১১ এপ্রিল আবেদন করেন আজম খলিল ।উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ এসপি (সার্কেল) চকরিয়া কে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেয়া হয়।বিষয়টি জেনে ও এই আদেশের একমাস পর অর্থাৎ মে মাসে তড়িঘড়ি করে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে নিহত ইব্রাহিমের স্ত্রী ভেলুয়া বেগম ও ছেলে ইসমাইলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয় সাদিয়া ও ইব্রাহিমের আরেক মেয়ে এস্তেফা বেগমকে। মামলার পুনরায় সিআইডি বা পিআইডির মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে চার্জশিট দেয়ার দাবী জানিয়েছেন নিহত ইব্রাহিমের ছোট ভাই আজম খলিল।
তিনি আরো অভিযোগ করেন,বারবার বলা সত্বে ও হত্যাকারী ভেলুয়াকে গ্রেফতারের পর কেন এ ধরনের চাঞ্চল্যকর মামলায় তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়নি।তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাকে দূর্বল করতে প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষী না নিয়ে বানোয়াট স্বাক্ষী বানিয়ে যেন তেন ভাবে মামলার চার্জশিট তৈরি করেছেন।যাতে মামলার বিচারিক কাজ শুরু হলে আসামীরা পার পেয়ে যেতে পারে।শুধু তাই নয় এ বিষয়ে কোথায়ও কোন তকবীর না করতে নিষেধ করেন মামলার তদন্তকারী এ কর্মকর্তা। মগনামা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার নিহতের চাচাত ভাই মোঃ আলমগীর বলেন,আসল ঘটনা যাতে চাপা পড়ে এবং আসামীরা চুডান্ত বিচারে পার পেয়ে যাবে তদন্তকারী কর্মকর্তার এ প্রতিবেন ও আসামীদের মনোনীত স্বাক্ষী গ্রহনের কারনে।এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বেশী বাড়াবাড়ি করলে আমার বিরুদ্ধে ও মিথ্যা মামলা দায়েরের হুমকি দেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ হাসেম বলেন, যথায়ত নিয়ম মেনেই যথা সময়ে চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমি কোন রকম অনিয়ম বা ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। যারা প্রকৃত অর্থে এ ঘটনা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রধান করা হয়েছে। সংক্ষুব্ধ হয়ে নিহতের ভাই আজম খলিল যা বলছেন তা সত্য নয়।তারা চাইলে আদালতের আশ্রয় নিতে পারে এতে আমার কিছু বলার নেই।