ঢাকা ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসে নিরাপত্তা জোরদার, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন বিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় বাংলাদেশের রিক্তা মন্দিরের ভিডিওটি বর্ধমানের, বাংলাদেশের নয়: রিউমার স্ক্যানার লাউড স্পিকারে আজান দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল ইসরায়েল ১৫ আগস্ট ছুটি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত সংখ্যালঘুদের ভারতে পালানোর দাবি অতিরঞ্জিত: দ্য হিন্দু লন্ডনে মীর্জা ফখরুল একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় সকল আসামিকে খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিমের বিবৃতি চট্টগ্রামে বোতলজাত সয়াবিনের কৃত্রিম সংকট যুক্তরাজ্যে হাসিনা-ঘনিষ্ঠদের বিপুল সম্পত্তি

শিবির ক্যাডার সোহেল যুবলীগের ব্যানারে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পটিয়া

#

নিজস্ব সংবাদদাতা

১৪ অক্টোবর, ২০২২,  9:11 PM

news image

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-চট্টগ্রামের পটিয়ায় হত্যা, ইয়াবা-অস্ত্র সহ একাধিক মামলার আসামী সাবেক শিবির ক্যাডার মো. নজরুল ইসলাম সোহেল ওরফে শিবির সোহেল যুবলীগের ব্যানারে দিনের পর দিন ত্রাস সৃষ্টি করে তার অপরাধ সম্রাজ্যের পরিধি বাড়িয়েই চলছে। ৩ বছরের ব্যবধানে শিবিরের ক্যাডার থেকে এক সংসদ সদস্যের আশ্রয়-পশ্রয়ে শিবির থেকে যুবলীগ নেতা এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যও বনে গেছেন। প্রশাসনের নজরে তার অপরাধের সকল আমলনামা থাকলেও প্রশাসন তাকে আইনের আওতায় না আনায় তৃণমূল যুবলীগ নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মো. নজরুল ইসলাম সোহেল প্রকাশ শিবির সোহেল ১৯৯৬ সালে শিবিরে যোগদান করার পর থেকে পটিয়া সহ চট্টগ্রাম দক্ষিণে ক্যাডার রাজনীতি শুরু করে। এরমধ্যে এক বড় ভাইয়েলর মাধ্যমে কক্সবাজার জেলার জিকু নামের একজনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আর পেঁছনে ফিরে থাকাতে হয়নি তাকে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরবরাহ করতে থাকে দেশী, বিদেশী অস্ত্র ও কার্তুজ। ২০০১ সালের ১ এপ্রিল উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আ’লীগের সহ-সভাপতি মোরশেদুল আলম লিটনকে হত্যা করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। যে মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।

২০০৮ সালে দেশে ফেরত আসে এবং তার বাবা সিরাজুল ইসলামের হাত ধরে বিএনপিতে পুনরায় যোগদান করেন। বিএনপিতে থাকাকালীন গাড়ি ভাংচুর সহ একাধিক মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। ২০১০ সাল থেকে পুনরায় শুরু করে অস্ত্র ও কার্তুজের ব্যবসা। বিএনপি নেতা হওয়া সত্তে¡ও থমকে যায়নি তার অস্ত্র ব্যবসা। স্থানীয় আ’লীগের কয়েকজন বড় নেতার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলায় তার অস্ত্র ব্যবসার রোডটা ম্যাপটাও ক্লিয়ার হয়ে যায়। 


২০১৯ সালে স্থানীয় এক সংসদ সদস্যের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে যুবলীগে নাম লিখান সোহেল। এরপর থেকে তার অস্ত্র ব্যবসার পথ আরো ক্লিয়ার হয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের কব্জায় শিবির সোহেল মাদক ও অস্ত্র সহ একাধিকবার ধরা পড়লেও টাকার বিনিময়ে সে ছাড়া পেয়ে যায়।


২০২১ সালের ৭ই এপ্রিল রাতে পটিয়া থানার একদল পুলিশ সিরাজুল ইসলামের ভাই হেফাজত নেতা লিয়াকত আলী(বাসু)কে গ্রেফতার করতে গেলে ৩’শ রাউন্ড কার্তুজ নজরুল ইসলাম সোহেলের বাসার ছাঁদ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই কার্তুজ গুলো সোহেলের হলেও পুলিশকে ম্যানেজ করে মাইকেল জসিম নামের এক জনকে এই মামলায় ফাঁসিয়ে দেয় সোহেল। পরবর্তীতে কয়েকটি কল রেকর্ড ফাঁস হলে সবাই জানতে পারে এই কার্তুজ সোহলের।

মাইকেল জসীমের মা তার ছেলেকে নির্দোশ দাবী করে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এছাড়াও জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ এবং তার ছেলে যে নির্দোশ তা প্রমাণ করতে তিনি কল রেকর্ড গুলো পুলিশ সুপারকে দেন।

সর্বশেষ ২০২২ সালের (১৯ এপ্রিল) মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জঙ্গল খাইন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমদকে তার বাড়িতে ইফতার মাহফিলের দাওয়াত কার্ড দিয়ে ফেরার পথে শিবির ক্যাডার সোহেলের নেতৃত্বে চিহ্নিত অস্ত্রধারীরা জঙ্গলখাইন রাস্তার মাথা আমজুর হাট এলাকায় উপজেলা যুবলীগের তিন নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গাড়িকে ব্যারিকেড দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ডি.এম জমির উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম সহ তিন নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।


এ ঘটনায় শিবির সোহেল কে প্রধান আসামী করে জঙ্গলখাইন ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সহ ১৪ জনকে আসামী করে যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে পটিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।


এই বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম জানান, আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে শিবির ক্যাডার সোহেলের নেতৃত্বে গুলি চালিয়েছিল অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। সবার দোয়া আছে তাই আমরা কোনো রকম সেখান থেকে বেচে ফিরেছিলাম। থানায় মামলা হলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেননি মামা খালুর জোরে। একটা অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেননি পুলিশ। একজন শিবির ক্যাডার গিরগিটির মত লেজ পাল্টিয়ে রাতারাতি কীভাবে যুবলীগ নেতা বনে যান। আমরা যারা তৃণমূলে রাজনীতি করেছি আমারাই জানি দলের জন্য, প্রধানমন্ত্রীর জন্য জামায়াত, বিএনপির বিরুদ্ধে কতটুকু লড়াই সংগ্রাম করেছি। পটিয়ার রাজনীতিকে কলুষিত করে একটি জামায়াত পরিবার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি জামায়াত-বিএনপির এজেন্ট থেকে দলকে মুক্ত রাখুন। এদের দোসররাই ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু সহ তার পরিবারের লোকজনদের হত্যা করেছিল।

logo

সম্পাদক : হেফাজুল করিম রকিব

নির্বাহী সম্পাদক : শাহ এম রহমান বেলাল