রোহিঙ্গা কামালের হাতে বাংলাদেশি এনআইডি
০৬ আগস্ট, ২০২২, 5:19 PM

NL24 News
০৬ আগস্ট, ২০২২, 5:19 PM

রোহিঙ্গা কামালের হাতে বাংলাদেশি এনআইডি
কক্সবাজার অফিস:
কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত মৌলভী কামাল হোসেন প্রকাশ হুন্ডি কামাল জেল থেকে বেরিয়ে আবারো জড়িয়ে পড়ছে মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা ও ইয়াবা পাচারের সাথে।তার রয়েছে বাংলাদেশি এনআইডি কার্ডও।
গত (৪ এপ্রিল) কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সাড়ে ১১ লাখ টাকাসহ এই রোহিঙ্গা কামালকে আটক করেছিল ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এর সদস্যরা।
কামাল হোসেন (৪০) উখিয়া কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের এ ব্লক/শেড-৪৩ এর মৃত আবুল কাশেম ও আয়েশা খাতুন এর ছেলে৷
কামাল হোসেন ২০০৩ সালে মিয়ানমার থেকে এসে চট্টগ্রাম একটি প্রতিষ্টানে দুই বছর পড়াশোনা শেষ করে হাফেজ ছালাহুল ইসলামের আন্ডারে জমিয়াতুল আহলিস সুন্নাহ নামের একটি সংস্থায় চাকুরি শুরু করে। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর প্রতিষ্টানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তারপর সে যোগ দেয় জঙ্গি নেতা রোহিঙ্গা ছালামতুল্লার সাথে। ছালামতুল্লার অধীনে কুতুপালং কচুবনিয়ার একটি মসজিদে সে ইমামতি করে কিছুদিন। সেই সুবাদে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বিয়েও করেন কামাল । এর পর সেখান থেকে চলে যায় কক্সবাজারের লিংকরোড় দক্ষিণ মহুরি পাড়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে। সেখানে কিছুদিন নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে সে। আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে সে নানা অনিয়ম - দুর্নীতির কারণে অবশেষে ওই প্রতিষ্টান ছাড়তে হলো তাকে ।
কামাল হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের কচুবুনিয়া এলাকা থেকে ২০০৮ সালে ভোটার তালিকায় অন্তরভুক্ত হয়েছিল যার এনআইডি নম্বর - ০৩১৭৩৫৭৩৪৭২৩৯ ।
এদিকে সে রোহিঙ্গা হিসাবে রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে বসবাস করে, অন্যদিকে বাংলাদেশী এনআইডি কার্ড নিয়ে সকল সুযোগ -সুবিধা গ্রহন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে । তার মাধ্যমে আরও অনেক রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ।এবং কেউ কেউ বাংলাদেশি এনআইডি নিয়ে বিদেশেও পাড়ি জমিয়েছে।
জানাগেছে, কামালের মূল পেশা হুন্ডি,মানবপাচার ও ইয়াবা ব্যবসা।এছাড়াও রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরসার সাথেও রয়েছে নিয়মিত যোগাযোগ।
মাত্র একমাস হয়েছে সে জেল থেকে জামিনে বের হয়েছে। এর মধ্যে কামাল ক্যাম্পের বাইরে এবং ভেতরে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপারে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ( এপিবিএন) অধিনায়ক এসপি নাইমুল হক জানান, গত ৪এপ্রিল দুপুরে কুতুপালং ক্যাম্পে ব্লক রেইড করে রোহিঙ্গা দুস্কৃতিকারী ও অর্থ পাচারকারী কামাল হোসেনকে আটক করা হয়। এ সময় তাকে তল্লাশি করে সাড়ে ১১ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।সেদিনের জব্দকৃত টাকার উৎস সম্পর্কে সে কিছুই জানাতে পারেনি ।
এসপি জানান, সে অর্থপাচার, হুন্ডি, চোরাচালান ও জঙ্গি সংগঠনে জড়িত থাকার তথ্য আমাদের কাছে এসেছে । এসপি নাইমুল হক আরো জানান, গত ৪ এপ্রিল জব্দকৃত টাকা গুলো সে মুলত হুন্ডি ও জঙ্গি সংগঠনে ব্যবহার করার জন্য পাচার করছিল। সেদিন পাচারের আগেই এপিবিএন এর হাতে আটক হয়েছিল কামাল।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত নই। রোহিঙ্গা কামাল যদি অবৈধভাবে বাংলাদেশি এনআইডি কার্ড বানিয়ে এর অপব্যবহার করে থাকে। সেটিও যেমন অপরাধ, আবার সে রোহিঙ্গা শরনার্থী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে থাকলে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। ব্যাপারটি প্রমাণ সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে ।
এব্যাপারে কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে মুঠোফোনে সে অকপটে স্বীকার করে, "আমার মতো আরো অনেকে রয়েছে যারা দ্বৈত নাগরিক সুবিধা ভোগ করছে" এই বলে সে কল কেটে দিয়ে আর ফোন রিসিভ করেনি৷