NL24 News
১৭ জানুয়ারি, ২০২২, 6:04 PM
মাইক্রোবাসে বসে টার্গেটের অপেক্ষা উঠলেই করে সর্বনাশ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সোমবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার।
এর আগে, রোববার রাতে নগরীর পাহাড়তলী থানার উত্তর কাট্টলী খেজুরতলী জাইল্যাপাড়া ব্রীজ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বরিশালের কাউনিয়া উপজেলার ভাটিখানা এলাকার মনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. সরোয়ার হোসেন ওরফে জনি ওরফে মনু, বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার বড়ইতলা পাওয়াপাড়া এলাকার হযরত আলীর ছেলে মো. রিপন ও একই উপজেলার ছোট তালতলী চাঁন মিয়ার বাড়ির মিজানুর রহমান ওরফে চাঁন মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা বেগম।
সিনিয়র সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার জানান, গাড়িতে যাত্রী বেশে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল একটি চক্র- এমন সংবাদের ভিত্তিতে পাহাড়তলী থানার উত্তর কাট্টলী খেজুরতলী জাইল্যাপাড়া ব্রীজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি দুনালা বন্দুক, দুটি এলজি ও চার রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান- রাতের বেলা যাত্রী সেজে মাইক্রোবাসে অবস্থান নেন তারা। গাড়িতে কেউ একক সিটে বসে তসবি পড়তে থাকেন, কেউ ভদ্রভাবে বসে থাকেন। এমন ভদ্রতা দেখে তাদেরও যাত্রী ভেবে কম টাকায় গন্তব্যে যেতে গাড়িটিতে উঠে পড়েন অনেকে।
উঠার পরই বিভিন্ন ধর্মীয় কথাবার্তা বলতে থাকেন ডাকাত দলের সদস্যরা। কিছুদূর যাওয়ার পর দলের একজন বলেন- আমি সামনে নামবো। তখন দলের দুই সদস্য সামনের সিটে চলে আসেন এবং টার্গেটকৃত যাত্রীকে মাঝখানের সিটে বসান।
এরপরই শুরু হয় তাদের আসল রূপ প্রদর্শন। মারধর ও গলায় গামছা পেঁচিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেন টাকা ও মোবাইল ফোন। এতেও ক্ষ্যান্ত হননা তারা। ভুক্তভোগীকে দিয়ে স্বজনদের কাছে ফোন করিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন মোটা অঙ্কের টাকা।
জরুরি অবস্থায় পালানোর পথ সুগম করতে গাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্রও রাখেন দলটির সদস্যরা। পরে ডাকাতি শেষে ভুক্তভোগীর চোখে মলম লাগিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লার মধ্যবর্তী সুবিধাজনক স্থানে ফেলে দিয়ে চলে যান।
র্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার আরো জানান, সম্প্রতি পাহাড়তলী থানায় এ ধরনের একটি ঘটনায় মামলা হয়। ডাকাতির শিকার ওই ব্যক্তি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গ্রেফতার সরোয়ার হোসেন ওরফে জনি ওরফে মনু ওই মামলার প্রধান আসামি।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগীদের নিয়ে অপরাধটি সংঘটন করেন বলে স্বীকার করেন মনু। গ্রেফতার রিপনের বক্তব্যেও ঘটনার হুবহু মিল পাওয়া যায়। এছাড়া ডাকাতির কাজে তাদের মাইক্রোবাস সরবরাহ করেন তাসলিমার স্বামী মিজানুর রহমান ওরফে চাঁন মিয়া। স্বামীর কাজে সহযোগিতা করতে ডাকাত দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তাসলিমা। প্রয়োজনে নিজেও ডাকাতির কাজে অংশ নিতেন।
ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। মনুর বিরুদ্ধে বরিশাল মহানগরীর বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ ১০টি মামলা রয়েছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে তাদের পাহাড়তলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।