ঢাকা ২০ এপ্রিল, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
পটিয়ায় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন পটিয়ায় ক্বলবে কুরআন আলো ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান পটিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার একজন পটিয়া এলডিপির ইফতার মাহফিল সম্পন্ন আনোয়ারায় ভাইয়ের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জায়গা দখলের অভিযোগ আ'লীগ নেতাদের ঈদ উপহার পৌঁছে দিলেন মেয়র আইয়ুব বাবুল উখিয়ায় বিট অফিসার সজল হত্যার ঘটনায় শোক ও প্রতিবাদ সভা ধরা’র নাগরিক অবস্থান "গাছ বাঁচাও প্রকৃতি বাঁচাও " এবং বনকর্মকর্তা সজলের নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে কর্মসূচী রাজনৈতিক সৌহার্দ্যেকে এগিয়ে নিতে যুব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে এমএএফ কক্সবাজারের সভা পটিয়ায় র‍্যাবের হাতে অস্ত্র কার্তুজ সহ গ্রেফতার শীর্ষ ব্যবসায়ী হামিদ-ধরা ছোয়ার বাইরে গডফাদার সোহেল

বাঁকখালী নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখতে কউক চেয়ারম্যানকে বাপার স্মারকলিপি

#

২৩ মার্চ, ২০২৩,  11:17 PM

news image

কক্সবাজার অফিস 

কক্সবাজার শহরের শ্বাস প্রণালী বাঁকখালী নদী ভরাট করে  প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা অবৈধ স্থাপনা ও সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তাদের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বাঁকখালী নদীর গতি প্রকৃতি ফিরিয়ে দেয়ার দাবীতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা কক্সবাজার জেলা শাখার পক্ষ থেকে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার স্মারক লিপি দিয়েছেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী ও ১ মার্চ দুই দিনে বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট পয়েন্টে  অভিযান চালিয়ে প্রায় চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ  যৌথভাবে এই সাহসী অভিযান চালিয়েছেন। এতে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের প্রবল বাঁধার মূখে পড়েন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন ও গনমাধ্যম কর্মীরা।এমনকি তারা প্রভাবশালীদের হামলার ও শিকার হন। এ উচ্ছেদ অভিযানের ফলে সর্বমহলে উচ্ছ্বসিত  প্রশংসিত হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় যে, হঠাৎ চলমান উচ্ছেদ অভিযান থেমে যাওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাই ঐতিহ্যবাহী বাঁকখালী  নদীর তীর ভরাট করে যে সব প্রাসাদ ও স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে, সবকটি গুড়িয়ে দিয়ে  নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবীতে বাপাসহ একাধিক পরিবেশবাদী সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানব বন্ধন করে আসছে কক্সবাজারে। এমনকি বেলার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে হাইকোর্টে মামলা ও করা হয়েছে বাঁকখালী নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে। 
কউক চেয়ারম্যানের কাছে দেয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় 
  যে নদীর তীরে গড়ে উঠেছিলো পর্যটন শহর কক্সবাজার,সেই বাঁকখালী নদীর প্রাকৃতিকভাবে গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় গড়ে ওঠা নদীর বিস্তৃত তীরভূমি দখল করে নিয়েছে অনেক প্রভাবশালী কতিপয় নেতৃবৃন্দ সহ সমাজের নানান্তরের প্রভাবশালী, ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা। দখলবাজ ভূমিদস্যু চক্রটি বাঁকখালী নদীর বিভিন্ন অংশে আবাসিক এলাকা গড়ে তুলেছে। 

অত্যান্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের  প্রভাবশালী দখলবাজরা দখল করা নদীর জায়গা পৈতৃক সম্পত্তির মতো করে নন জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে নোটারী: পাবলিকের মাধ্যমে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে উচ্চমূল্যে বেচা-বিক্রি করে নিরীহ লোকজন থেকে হাতিয়ে নিয়েছে শত শতকোটি টাকা। 

তারা নদীর তীরে প্রায় এক হাজার একর বনবিভাগের সৃজিত প্যারাবনও ধ্বংস করেছে সম্পূর্ণভাবে। বাঁকখালী নদী রক্ষা ও অবৈধ দখলমুক্ত করতে কক্সবাজারের সচেতন সকল নাগরিক সমাজ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)সহ পরিবেশবাদীরা দীর্ঘদিন হতে নানা কর্মসূচী পালন করে আসছিলো। এর মধ্যে মহামান্য হাইকোর্টে  আবেদনও করেন পরিবেশকর্মীরা। দেশের উচ্চ আদালত বাঁকখালী নদী  থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর জায়গা নদীকে ফেরত দিতে আদেশ দেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের।  বাহিনী ও ইল এদিকে উচ্ছেদ অভিযান চলার পরপরই উচ্ছেন অভিযান বন্ধ করতে নানামুখী চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা এক হয়ে যায়।  বর্তমানে বাঁকখালী নদীর বাংলাবাজার থেকে শুরু করে জেলা শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া পর্যন্ত নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার  তীরভূমিতে কমপক্ষে ৫/৭ হাজার  অবৈধ স্থাপনা আজো পর্যন্ত বিদ্যমান। জেলা নদী রক্ষা কমিটি, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএ সহ সরকারী বিভিন্ন সংস্থার মাঠ পর্যায়ে জরিপ করে বাঁকখালী নদীর দখলদারদের তালিকা তৈরী করেছে। যে তালিকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নাম ও রয়েছে । তাদের এসব অবৈধ স্থাপনা এখনো উচ্ছেদ করা হয়নি।

উল্লেখ্য বাঁকখালীকে দখল প্রক্রিয়া থেকে মুক্ত করতে গত ২০১৪ সনের ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করে। বাঁকখালী দখলকারীদের তালিকা তৈরি করে উচ্ছেদ এবং দুষণের উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। ওইসময় ১০ সরকারি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যেন কোন কারণে বাঁকখালী নদী ভরাট না হয় তার যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার। সচেতন মহলের দাবি, শীঘ্রই যদি বাঁকখালীকে বর্জ্য দিয়ে ভরাট এবং অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া না হয় তবে দ্রুত বাঁকখালী তার নাব্যতা হারাবে এবং জেলার ঐতিহ্য থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এ নদী ও ।ফলে আপদকালীন নৌযান সমূহের অন্যতম পোতাশ্রয়টি দূষণ ও দখলে অস্তিত্ব হারাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। 

 বাঁকখালী নদীর তীরভূমিসহ কক্সবাজারে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারী জমিগুলো পুনরুদ্ধার করাটা জরুরী বলে ও উল্লেখ করা হয় স্মারকলিপিতে।এর আগে জেলা প্রশাসক ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে জেলা বাপার পক্ষ থেকে দেয়া হয় স্মারকলিপি। 

কক্সবাজার জেলা বাপার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী, সিনিয়র সহসভাপতি এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ,যুগ্ম সম্পাদক এম জসিমউদদীন ও সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুলসহ অর্ধশতাধিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এই স্মারক লিপি দেয়া হয়।
স্মারকলিপি গ্রহন করেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অবঃ কমোডর)  নুরুল আবছার। তিনি এ সময় বলেন, বাঁকখালী দখলদারদের চিহ্নিত করা হয়েছে। নদী তীর ভূমি উদ্ধারে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। কোন অবৈধ দখলদারকে ছাড় দেয়া হবেনা।আর সরকারী জমি যেসব ভূমিদস্যুরা দখল করে আছে, এগুলি ও উদ্ধার করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।বিশেষ করে অবারিত সমুদ্র সৈকত তীরের এলাকাকে দ্রুত দখলমুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে ও তিনি জানান। 

logo

সম্পাদক : হেফাজুল করিম রকিব

নির্বাহী সম্পাদক : শাহ এম রহমান বেলাল