ঢাকা ২০ অক্টোবর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
ক্রিকেটে নতুন যুগের সূচনা: আবির্ভাব হলো টেস্ট টোয়েন্টি দক্ষিণ ভূর্ষি শীতলা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাঞ্চন নাথ, সম্পাদক সুমন দেবনাথ “টাইফয়েড এখনো মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা"—সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম “টাইফয়েড এখনো মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা"—সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উত্তেজনা: ছাত্রদল কমিটিতে ‘শিবির সংশ্লিষ্টতার' অভিযোগ পটিয়ায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করতে সমন্বয় সভা পটিয়ায় ভূমি অফিসে দালালবিরোধী অভিযান, এক যুবকের সাজা ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৪২ পটিয়ায় একই দিনে অজ্ঞান পার্টির প্রতারণা ও দরজা কেটে ১৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে স্বর্ণালংকার- নগদ টাকা হারালেন বৃদ্ধা

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সেই শিক্ষিকার আত্মহত্যা

#

নিজস্ব সংবাদদাতা

১৪ আগস্ট, ২০২২,  4:10 PM

news image


নাটোর প্রতিনিধি:

নাটোরে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া  কলেজ শিক্ষিকা ও ছাত্রের মধ্যে প্রেম ও বিয়ের অলোচিত সেই শিক্ষক  খাইরুন নাহারের মৃত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খাইরুন নাহারের স্বামী কলেজ ছাত্র মামুনের দাবি সে ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।  পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনকে আটক করে নাটোর থানায় নিয়ে এসেছে । আজ সকালে নাটোর শহরেরবলারী পাড়া এলাকার সাবেক কমিমশনার নান্নু শেখের বাড়ীর ৪ তলা ফ্লাট থেকে খায়রুন নাহারের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খায়রুন নাহার স্বামী মামুনকে নিয়ে ওই বাসায়ভাড়া থাকতেন।  

খারুন নাহারের স্বামী  মামুন জানান, রাত দুইটার দিকে খায়রন নাহার খুব অসুস্থ বোধ করলে আমি ঔষধ নিতে হাসপাতালে যাই। ফিরে এস দেখি দরজা খোলা। তখনই আমার ভিতরে আশঙ্কা ভর করে। বেড রুমে ঢুকে দেখি খায়রুন নাহার গলায় ওড়না পেচিয়ে সিলিংয়ের সাথে ঝুলছে। আমি তাকে নামানোর জন্য বটির খোঁজে রান্না ঘরে যাই। কিন্তু বটি না পেয়ে লাইটার জ্বালিয়ে ওড়নায় আগুন ধরিয়ে দেই। ওড়না অর্ধেক পুড়ে গেলে টান দিয়ে ছিড়ে তার দেহ নামিয়ে খাটে শুইয়ে দেই। এরপর দৌড়ে গিয়ে আমি আমি নিচের তালায়  নাইট গার্ডনিজাম উদ্দিনকে খবর দেই। ফিরে এস দিখি সে মারা গেছে। তিনি জানান, অনেক রাত হওয়ায় আমি পাশের ফ্লাটের কাউকে ডাকিনি। নাইট গার্ড জিাম উদ্দিন  জানান, রাত দুইটার দিকে মামুন নিচে নেমে এসে জানায় সে হাসপাতালে যাবে। তখন আমি গেটখুলে দেই। এরপর ফিরে আসার কিছুক্ষণ পরেই জানায় তার বউ গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। এরপর ওপরে গিয়ে আমি খাটেরওপর শোয়ানো মৃত দেহ দেখতে পাই। পরে পুলিশকে জানানো হয়।এরপর পুলিষশ আসে।

জানা যায়, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে দুজন গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের ছয় মাসেরও বেশি সময় পার হওয়ার পর সম্প্রতি বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। শিক্ষিকা মোছা. খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। মামুন নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক বছর আগে ফেসবুকে শিক্ষিকা খাইরুনের সঙ্গে একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের কলেজছাত্র মোহাম্মাদ আলীর ছেলে মামুনের পরিচয় হয়। পরে তাদের দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করেন তারা। এর আগে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় একজনের সঙ্গে বিয়ে হয় খাইরুন নাহারের। তবে পারিবারিক কলহে সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি। প্রথম স্বামীর ঘরে তার বড় ছেলেবৃন্ত  রয়েছে। অপরদিকে ছোট ছেলে বিম্ রয়েছে তার নানার বাড়ি গুরুদাসপুর পৌর এলাকার খামার নাচকৈড়ে নানার বাড়িতে।

বিয়ের ছয় মাস পর তাদের সম্পর্ক জানাজানি হলে ছেলের পরিবার মেনে নিলেও খায়রুন নাহারের  পরিবার মেনে নেয়নি। বর্তমানে নাটোর শহরের বলারী পাড়া এলাকায় সাবেক কমিশনার নান্নুর ছেলে তানভীর সিদ্দিকী সুজনের  বাড়ির ৪তলা ফ্লাটে  ভাড়া ভাড়াটিয়া হিসেবে দুজন বসবাস করছিলেন।

ইতপূর্বে  খাইরুন নাহার বলেছিলেন , ‘প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। সেই সময় ফেসবুকে মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর আমাদের দুজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থেকে ভালোবাসা হয়। তারপর দুজন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিয়ে করেন।’

মামুন বলেন, বিয়ের পর থেকে আমাদের সংসারে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোন বিরোধ ছিল না। কিন্তু  খাইরুন নাহারের পরিবার বিয়েটা মেনে নেয়নি। তিনি বলেন,  খায়রুন নাহার মাত্র দুইদন আগে বেতন তুলেন। তার লোন থাকায় ২৭ হাজার টাকার মধ্যে ২০ হাজার টাকা কেটে নেয়। বাকী ৭ হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা তার বড় ছেলেকে দেয়। কিন্তু ছেলের দাবি এখন তার ৬ লাখ টাকা লাগবে। কিন্তু ওই টাকা দেওয়ার মত সামর্থ্য তার ছিল না। ফলে বড় ছেলের সাথে তার মনো মালিন্য হয়। এ নিয়ে সে মানষিক কষ্টে ভুগছিল। তারপরেই এ ঘটনা। আমি তাকে নানা ভাবে বুঝ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে মানসিকযাবে।  ভাবে ভেঙ্গে পড়েছিল।

নাটোরের পুলিশ সুপার রিটন কুমার সাহা জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে। ফ্যানের সংগে আগুন দিয়ে পোড়ানো ওড়নার অংশ বিশেষ দেখা গেছে। সব কিছু দেখে প্রথমিকভাবে আত্ম হত্যাই মনে হয়। তিনি বলেন, অসম বিয়ের কারণে কলিগ আত্মীয় স্বজন এবং পরিচিতজনদের অসহযোগিতা তাকে আত্ম হত্যার প্ররোচনার কাজ করতে পারে। পুলিশের একাধিক টিম বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। আমরা আশা করছি দ্রতই সঠিক কারণ জানা যাবে।

logo

প্রধান সম্পাদক : হেফাজুল করিম রকিব

সম্পাদক : নূরুন্নবী আলী