পটিয়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অনিয়ম তদন্ত শেষ_যেকোন সময় ব্যবস্থা
নিজস্ব সংবাদদাতা
০১ মে, ২০২৩, 1:44 AM

নিজস্ব সংবাদদাতা
০১ মে, ২০২৩, 1:44 AM

পটিয়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অনিয়ম তদন্ত শেষ_যেকোন সময় ব্যবস্থা
নিজস্ব সংবাদাতা, পটিয়া:- চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সব্যসাচী নাথের বিরুদ্ধে আনা নানা অভিযোগ ও অনিয়মের বিষয়ে ফের তদন্ত করেছে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি।
রবিবার(৩০ এপ্রিল) দুপুরে পটিয়া সরেজমীন এসে তদন্ত করেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বির নেতৃত্বাদীন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
এর আগের গত ২৭ শে এপ্রিল পটিয়া পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। যেখানে ডাক্তার শেখ ফজলে রাব্বিকে সভাপতি, নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী পরিচালক(প্রশাসন) স্বাস্থ্য এর দপ্তরকে সদস্য করা হয়।
এসময় তদন্ত কমিটির বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল প্রামাণিক তথ্য তুলে ধরে বলেন, পটিয়া পৌরসভায় দুই লক্ষ লোকের বসবাস। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত কোভিড-১৯ টিকা একটি কেন্দ্রে দেওয়া সম্ভব নয়, তাই আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে টিকার কেন্দ্র বৃদ্ধির কথা বললেও তিনি তা কর্ণপাত ও করেননি। নিরুপায় হয়ে আমি উচ্চ মহলের সাথে আলাপ করে পটিয়া পৌরসভা নয়টি কেন্দ্র স্থাপন করেছি
পটিয়া পৌরসভা একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা এইখানে মেয়রের পদমর্যাদা উপসচিব সমান, তাই আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে warrant of president rule অনুসরণ করতে বলার পরও তিনি তা কর্ণপাত করেননি, বারবার তিনি পৌরসভার সম্মান ক্ষুন্ন করেছেন।
এছাড়াও আমার পরিবারের সদস্যদের করোনার ঝুঁকি থাকাই তাদেরকে টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সব্যসাচীর কাছে বারবার ধরনা দিলেও তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে করোনার টিকা মারা থেকে বঞ্চিত রাখেন। অবশেষে আমি লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা গ্রহণ করি।
কিন্তু আমার একমাত্র পুত্র আতিক শাহরিয়ার মাহি ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তিনি তাকে টিকা থেকে বিরত রাখেন। পরবর্তীতে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর আমি উনাকে বারবার অনুরোধ করার পরও তিনি আমার ছেলের টিকার কোন ব্যবস্থা করেন নাই শেষ পর্যন্ত আমার একমাত্র ছেলে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
এছাড়াও তিনি সরকারের বরাদ্দকৃত কোভিট-১৯ টিকার দায়িত্ব পালনকারী সেচ্ছাসেবী, গ্রাম পুলিশ, আনসারদের জন্য আসা সরকারী বরাদ্দেরর টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়াও এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দিনের পর দিন নিজের আধিপত্য বিস্তার করে রেখে দিনের পর দিন দূর্নীতি করে যাচ্ছে। পটিয়ার সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই দূর্নীতিগ্রস্থ অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এর আগেও তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। তদন্তে সত্যতা মিললেও মামা খালুর তদবিরে এই মেডিকেলে বহাল তবিয়তে আছে। আমি আশা করছি এইবার সুষ্ঠু তদন্ত শেষে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা শাস্তিমূলক অপাসারণের জন্য ব্যবস্থা নিবেন।
তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির সভাপতি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, যে বিষয় গুলো নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সব্যসাচী নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা আমরা সরেজমীনে খতিয়ে দেখেছি। তদন্ত রিপোর্ট আমাদের উর্দ্বতন কর্মকর্তার নিকট জমা দিব। তারা তা দেখে ব্যবস্থা নিবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।সরেজমীনে অভিযোগ ও অনিয়মের বিষয়ে সত্যতা মিলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। কিন্তু প্রতিবেদনে সত্যতা মিললেও তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেননি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
#এনএল/এমএ