পটিয়ায় ৪ গ্রামে সুপেয় পানি সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট
নিজস্ব সংবাদদাতা
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 11:37 PM

নিজস্ব সংবাদদাতা
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 11:37 PM

পটিয়ায় ৪ গ্রামে সুপেয় পানি সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট
পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা ৪ গ্রামে যথাক্রমে হাবিলাস দ্বীপ, চরকানাই, হুলাইন, পাচুরিয়া সংকটাপন্ন ঘোষণা করে পূর্বের রায়ের ধারাবাহিকতায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে সুপেয় পানি সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
উল্লেখিত গ্রামের আশপাশে থাকা আটটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে সুপেয় পানির তীব্র সংকটে পড়েছে গ্রামবাসী। হাবিলাস দ্বীপ ইউনিয়নের চরকানাই, হুলাইন, পাচুরিয়া এবং হাবিলাসদ্বীপ গ্রামে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ৩৫০টি টিউবওয়েল স্থাপন করে। এসব টিউবওয়েল বিকল হয়ে পড়লে গ্রামগুলোর প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সুপেয় পানির তীব্র সংকটে পড়ে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর দেওয়া রায় বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মাহমুদুল হক এবং বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক (ডিজি), জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি), পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান, জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং সহকারী প্রকৌশলীকে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের । একই সঙ্গে রায়ে প্রদত্ত নির্দেশনাবলী বাস্তবায়ন করে আগামী ৩ মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আটটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বনফুল অ্যান্ড কোম্পানি (ফুড প্রোডাক্টস), বনফুল অ্যান্ড কোম্পানি (মিনারেল ওয়াটার), আম্বিয়া নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড, আম্বিয়া পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেড, মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্স লিমিটেড, হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেড, আনোয়ারা পেপার মিলস লিমিটেড ও শাহ আমানত নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড।
শুনানি শেষে আদালত পানি আইন ২০১৩-এ ধারা (১৭)- এর অধীনে চরকানাই, হুলাইন, পাচুরিয়া এবং হাবিলাস দ্বীপ গ্রামকে পানি সংকাটাপন্ন এলাকা ঘোষণার বিষয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত ওই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসককে আটিটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের দূষণের পরিমাণ যাচাই করে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পটিয়া উপজেলায় পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া এবং কার্যকরী বর্জ্য শোধনাগার প্ল্যান ছাড়া কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান যেন পরিচালিত হতে পারবে না। তা বাস্তবায়ন করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আদালতের নির্দেশ প্রতিপালন বিষয়ে মেমো প্রস্তুত করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, যে এটিই প্রথম আইনি পদক্ষেপ, পানি আইনের অধীনে।