পটিয়ায় দক্ষিণ ভূর্ষি রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম ঘিরে ফের উত্তেজনা, সংঘাতের আশঙ্কা
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৪ মে, ২০২৫, 1:30 PM

নিজস্ব সংবাদদাতা
২৪ মে, ২০২৫, 1:30 PM

পটিয়ায় দক্ষিণ ভূর্ষি রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম ঘিরে ফের উত্তেজনা, সংঘাতের আশঙ্কা
পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভূর্ষি এলাকায় অবস্থিত রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম পরিচালনা নিয়ে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আশ্রম পরিচালনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। যে কোনো সময় এ বিরোধ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ আশ্রমটি স্থানীয়ভাবে একটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর এখানে ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেবের জন্মতিথি, দুর্গাপূজা, কালিপূজাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
তবে সম্প্রতি পটিয়া পৌর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক দেবাশীষ দাশ দীপক নিজেকে আশ্রমের সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে এ বিষয়েই একবার সহিংসতা হয়েছিল, যাতে অন্তত ৭-৮ জন আহত হন। তখনকার সময়ে থানা পুলিশের সমঝোতা অনুযায়ী, ৪ নম্বর ওয়ার্ড ব্যতীত অন্য কোনো ওয়ার্ডের কেউ আশ্রম পরিচালনা কমিটিতে থাকতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
এই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গত ২০ নভেম্বর নতুন কমিটি গঠনের চেষ্টায় পুনরায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে আশ্রম পরিচালনা পরিষদ বিলুপ্ত করে একটি উৎসব কমিটি গঠন করা হলেও, বিতর্ক থামেনি। সর্বশেষ গত ১৭ মে ভূয়া কমিটি সাজিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে দেবাশীষ দাশ নিজেকে আশ্রমের সভাপতি ঘোষণা করলে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি আশ্রমকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন এবং বিরোধীদের হুমকি দিচ্ছেন। পাশাপাশি আশ্রমের নামে অর্থ উত্তোলনের পর তার কোনো স্বচ্ছ হিসাব প্রকাশ না করায় ক্ষোভ বাড়ছে। আয়-ব্যয়ের হিসাব অনুযায়ী ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থ সম্পাদক রাহুল দাশের কাছে জমা থাকলেও, তা নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা দেবতোষ জানান, “আমরা নিয়মিত মন্দিরের কার্যক্রমে সহযোগিতা করি, অথচ আমাদের অজ্ঞাতে রাতারাতি কমিটি গঠন করা হয়েছে।” আশিষ দাশ বলেন, “আমি আশ্রমের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকলেও কমিটি গঠনের বিষয়টি জানতাম না। বিষয়টি দুঃখজনক।”
মধ্যস্থতায় থাকা আরেক স্থানীয় এ নুর জনি বলেন, “সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে।”
এলাকাবাসীর মতে, অব্যবস্থাপনা, স্বজনপ্রীতি ও একচেটিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ চলতে থাকলে রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমে সহিংসতা অনিবার্য হয়ে উঠবে। তারা ধর্ম মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যেন এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি শান্তিপূর্ণভাবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।