পটিয়ায় থামছেইনা কিশোর গ্যাং আতঙ্ক।।ছুরিকাঘাতে মারা গেলেন এক ব্যাক্তি
নিজস্ব সংবাদদাতা
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 7:29 PM

নিজস্ব সংবাদদাতা
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 7:29 PM

পটিয়ায় থামছেইনা কিশোর গ্যাং আতঙ্ক।।ছুরিকাঘাতে মারা গেলেন এক ব্যাক্তি
মোরশেদ আলম, পটিয়াঃ- চট্টগ্রামের পটিয়ায় থামানো যাচ্ছে না কিশোর অপরাধীদের তান্ডব। কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে পটিয়ার জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। রাজনৈতিক নেতাদের শেল্টারে উপজেলার মধ্যে গড়ে উঠেছে ডজনের বেশি কিশোর গ্যাং এর গ্রæপ। নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে প্রায় সময় এরা সংঘবদ্ধ হয়ে চালায় হামলা, সৃষ্টি করে আতংক। এদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না সাধারণ মানুষ। সর্বশেষ কিশোর গ্যাং এর ছুরিকাঘাতে আহত আব্দুল মান্নান(৫২) নামের এক ব্যক্তি শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি পৌর এলাকার হাবিবুর পাড়ার মৃত চান মিয়ার ছেলে। নিহতের বন্ধু ব্যবসায়ী ফজল আহমদ জানান, গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার পেটে অপারেশন করা হয়েছে। অপারেশন পরবর্তী তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে তিনি মারা যান। সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জানুয়ারি দুপুরে পৌর সদরের ডাকবাংলো মোড় এলাকায় অটোরিকশা পার্কিংয়ের ইজারাদার আবদুল মান্নান ও বদিউল আলমের সঙ্গে অটোরিকশাচালক ওমর আলীর বাকবিতন্ডা হয়। খবর পেয়ে ওমর আলীর ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার সোহেল তার দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আবদুল মান্নান ও বদিউল আলমকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। শুক্রবার আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুল মান্নান মারা যান। আহত বদিউল আলম (৪২) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রযেছে। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারী রাতে কিশোর গ্যাং এর সদস্য জুলু, জুবাইয়েদ ও ফরহাদের নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতাকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডুকে প্রকাশ্যে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় গুরতর আহত হন, পটিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের আ’লীগ নেতা মো. হানিফের ছেলে পৌর যুবলীগ নেতা আমান উল্লাহ শিমুল (৩৭)। আহত হয়েছেন, পটিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিয়াউল হক রুবেল (২৬)। হামলার শিকার শিমুলের বড় ভাই ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ পলাশ বলেন, কিশোর গ্যাং এর লিডার সন্ত্রাসী জুনুর নেতৃত্বে ১৫/২০ জন তার ভাই এবং রুবেল কে হত্যার উদ্দ্যেশ্য কুপিয়েছে। পটিয়া মেডিকেলের সিসি ক্যামরার ফুটেছে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা যাবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ নেতা মো. সাজ্জাদের বরাদ দিয়ে জানা যায়, শুক্রবার(১৩ জানুয়ারী) রাত সাড়ে ৭টার দিকে পটিয়া পৌর সদরের স্টেশন রোড এলাকায় তার মোটরসাইকেলকে সামনে থেকে জোরে ধাক্কা দেই। এসময় সিএনজি চালক ও মোটরসাইকেলে থাকা দু'পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটলে স্থানীয় জিয়াউল হক রুবেল উভয় পক্ষকেই নিবৃত করার চেষ্টা করেন এবং ঘটনাটি মিটমাট করতে গেলেই তখন সুচক্রদন্ডী এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুনু তার দলবল নিয়ে রুবেলের ওপর হামলা চালিয়ে তার চোখ ও মুখে রক্তাক্ত জখম করেন। এ অবস্থায় তাকে শিমুল ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে তার চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে আবারো দেশীয় রামদা, কিরিচ সহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হাসপাতালেই হামলা চালায়। এ সময় জুনুসহ ১০-১৫ জনের মুখোশ পরিহিত সন্ত্রাসীরা জিয়াউল হক রুবেল এর উপর হামলা চালাতে গেলে আমানুল্লাহ শিমুল তাদের হাত থেকে রুবেল কে রক্ষা করতে গেলে তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান সন্ত্রাসীরা।
এই রকম প্রায় প্রতিদিনই কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা চুরি, ডাকাতি, খুন, ছিনতাই, জায়গা দখল সহ সকল অপরাধ মূলক কাজে লিপ্ত আছে। এমন অবস্থাই পটিয়ার সাধারণ জনগন এর থেকে পরিত্রান চেয়ে প্রশাসনের ভূমিকা জোরালো করার তাগিদ দেন।
এবিষয়ে পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, ছুরিকাঘাতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং প্রধান আসামিকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে।