পটিয়ায় অপহরণ আতংকে শিক্ষার্থীরা
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 1:56 PM

নিজস্ব সংবাদদাতা
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 1:56 PM

পটিয়ায় অপহরণ আতংকে শিক্ষার্থীরা
মোরশেদ আলম:- উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের চাপড়া গ্রামের প্রবাসী মো: আইয়ুব খানের মেয়ে ৮ম শ্রেনিতে অধ্যনয়রত সুলতানা ইসলাম মিম (১৩)। পটিয়া মুনসেফ বাজারস্থ খালা মনির বাসায় আসার জন্য তার মা কামরুন নাহার গত শুক্রবা্র দুুপুরে সিএনজিতে তুলে তেন পটিয়া মুনসেফ বাজারস্থ খালার বাসায় আসার জন্য। দুপুর ঘনিয়ে সন্ধা হয়ে আসলেও তার খালার বাসায় না পৌঁছালে চিন্তায় পরে যায় সবাই। চারিদিকে খেঁাজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে পটিয়া থানার দ্বারস্থ হয় তার মা কামরুন নাহার। ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও তার কোন খদিস মিলেনি এখনো।
অপরণকৃত মিম আক্তারের মা কামরুন নাহার সাংবাদিকবদের জানান, সি.এন.জি চালক আমার মেয়েটিকে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অনেক খেঁ্বাজাখঁুজির পর না পেয়ে সন্ধা ৬টার সময় স্থানীয়দেও পরামর্শে পটিয়া থানায় নিখেঁাজ ডায়েরী করতে যায়। নিখেঁাজ ডায়েরী করতে গেলে ডিউটি অফিসার হারানো ডায়েরী নিতে গরিমসি করেন। ডিউটি অফিসার বলেন, ‘ওসি স্যারের থেকে জিজ্ঞেস করতে হবে’, ১২ ঘন্টা পার হয়নি। আপনারা খেঁাজ নিয়ে দেখেন কোথাও আছে কীনা। পরবর্তীতে অনেক আকুতি মিনতি করার পর হারানো ডায়েরী গ্রহণ করেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গনমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আকুতি জানিয়ে বলেন, আমার মেয়েকে ফিরে পেতে সাহায্য আপনারা সাহায্য করুন। সর্বশেষ শনিবার দুপুরে পূরবী দে (১৯) নামের এক নার্সিং পড়–য়া কলেজ ছাত্রী চট্টগ্রাম থেকে তার নিজ বাড়ি উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নে আসার জন্য রেগুনা হয়ে শান্তিরহাট পর্যন্ত আসে। ঐখান থেকে পটিয়া ডাকবাংলো মোড়ে আসার জন্য আরেকটি রেগুনাতে উঠে। ডাকবাংলো মোড়ে এসে গাড়িটি পৌঁছালে গাড়িটি সেখানে না থেমে বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে ডাকবাংলো মোড় ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় কলেজ ছাত্রী পূরবী বারবার গাড়ি চালককে গাড়ি থামানোর জন্য বললেও গাড়ি না থামিয়ে বাসষ্টেশন চলে যায়। সে গাড়ি চালকের অস্বাভাবিক গতিবিধি দেখে চিৎকার করতে লাগে। এক পর্যায়ে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে অপহরণ থেকে সে নিজেকে বঁাচিয়ে ফিরে। তবে সে গুরতর আহত হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান রিপন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তার অবস্থা গুরতর হওয়ায় পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কত্যর্বরত ডাক্তার রহিমা খাতুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেকে) প্রেরণ করেন।
পূরবীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শান্তিরহাঠ থেকে আমি পটিয়ার উদ্দেশ্যে রেগুনাতে উঠি। গাড়িটিতে কয়েকজন যাত্রী থাকলেও আমজুর হাঠ আসার আগেই তারা নেমে যায়। আমি একা হয়ে গেলে গাড়ির চালক ও হেলফার নিজেদের মধ্যে কি যেন ফন্দি বুনছিল। ডাকবাংলো মোড় ক্রস করে যখন গাড়িটি চলে যাচ্ছিল আমি নিজেকে এদের হাত থেকে রক্ষার জন্য গাড়ি থেকে লাফ দিই। এই ভাবেই চরম আতংক ও উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে স্কুল, কলেজে যাওয়া আসা করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পটিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকের সাথে এই বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান, এই রকম প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা যদি অপহরণ হতে থাকে তাহলে পটিয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। শিক্ষার্থীরা স্কুল, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে অনিহা প্রকাশ করবে। অভিবাবকরাও এই অপহরণ আতংকের মধ্যে থাকবে। এমন অবস্থায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা কঠোর করা না গেলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।
এই বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানান, স্কুল, কলেজ ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় থানায় নিখেঁাজ ডায়েরী হয়েছে। আমরা অপহরণকারীদের শনাক্ত করে অপহৃত শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছি।