নিয়োগবিধি লঙ্ঘন করে সরকারি কৃষি কর্মকর্তার বেসরকারি এগ্রোফার্মেও চাকরী!
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 8:13 PM

নিজস্ব সংবাদদাতা
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 8:13 PM

নিয়োগবিধি লঙ্ঘন করে সরকারি কৃষি কর্মকর্তার বেসরকারি এগ্রোফার্মেও চাকরী!
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- চন্দনাইশ কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুপায়ন চৌধুরী সরকারী চাকরী ফাঁকি দিয়ে সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে পটিয়ার একটি বেসরকারী এগ্রোফার্মে মোটা অংকের বেতনে চাকরী করছেন। দীর্ঘদিন ধরে নিজ কর্মস্থলে কাজ না করে বেসরকারী ফার্মে চাকরি করলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমিালা ১৯৭৯-এর ১৭ নম্বর ধারায় বলা আছে, কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারের অনুমোদন ছাড়া, সরকারি কাজ ছাড়া অন্য কোনো ব্যবসায় জড়তি হতে পারবনে না। অন্য কোনো চাকরি বা কাজ গ্রহণ করতে পারবনে না। যা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমিালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এটি আর এগ্রো ফার্মে কর্মরত কয়েকজন জানান, পটিয়া উপজেলা হাইদগাঁও ইউনিয়নের মৃত অরুন অংসুর পুত্র রুপায়ন চৌধুরী বিগত ১৫ বছর ধরে চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিসে উপ-সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও গত ২/৩ বছর ধরে টি আর এগ্রো ফার্মে কাজ করে যাচ্ছেন। সকাল এবং বিকেলে দুই শিপ্টে কাজ করেন তিনি। মাসিক ৮ হাজার টাকা বেতন পাশাপাশি অন্য সুবিধা ও তার জন্য থাকে। তার ইশারায় চলে সকল কর্মকান্ড। গত ২ বছরে তিনি ৫০ জনেরও বেশি গরীব লোকদের এই ফার্ম থেকে চাকুরিচ্যুত করেছেন। তাছাড়া টাকার বিনিময়ে তার পছন্দের লোককে চাকরী দিয়েছেন। কেউ তার সেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে গিয়ে কথা বলতে গেলে তারা চাকরী হারান।
এছাড়াও আরো কয়েকটি ফার্মে তিনি চাকরী করেন। সরেজমীনে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় এটি আর এগ্রো লিঃ এর অফিসে কৃষি কর্মকর্তা রুপায়ন চৌধুরী কাজ করছেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়-‘ তিনি কেন সরকারী চাকরী ফাঁকি দিয়ে এই এগ্রো ফার্মে কাজ করছেন’।
তিনি বলেন, আমি এই ফার্মে সহযোগিতা করছি আর কিছুনা। আপনার সাথে কী আমার কোনো শত্রুতা আছে। এগ্রোফার্মের একাউন্ট্যান্ট ফোরকান উদ্দিন জানান, প্রতিমাসে ৮ হাজার টাকা বেতন নিয়ে যান তিনি। এর বাইরে আরো অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
এগ্রোফার্মের ইনচার্জ রফিক আহমদ বলেন, এই কৃষি কর্মকর্তা নিজের ডিউটি পালন না করে এই ফার্মে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করেন। ফার্মের মালিকের সাথে সক্ষতা করে নিজের সেচ্ছাচারিতা এই ফার্মে প্রয়োগ করে যাচ্ছেন। স্থানীয় আজিম উদ্দিন জানান, সরকারী গাছের চারা ও সার তিনি এখানে নিয়ে আসে ফিল্ডে না দিয়ে। এই ফার্মের মালিক হাজী নুরুল আলম মাষ্টারের কাছ থেকে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা নেই তিনি।
এই বিষয়ে চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিসার স্মৃতি রানী সরকারের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, এই কৃষি কর্মকর্তা কোনো এগ্রোফার্মে পরামর্শ দিতে পারেন কনসালটেন্ট হিসেবে। তবে সরকারী কৃষি অফিসের কাজ ফেলে অন্য ফার্মে চাকরী করতে পারবেননা তিনি। আমি আরো অনেকজনের কাছ থেকে তার চাকরি বিষয়ে শুনেছি। যদি এটা সত্য হয় তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।