নির্মাণের পর ভেঙে পড়ল ‘বীর নিবাস’
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 9:20 PM

NL24 News
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 9:20 PM

নির্মাণের পর ভেঙে পড়ল ‘বীর নিবাস’
নিজস্ব প্রতিনিধি : বরগুনার বেতাগীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত একটি ঘর নির্মাণের পরপরই ঘরটি ভেঙে পড়ে। এমনি একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সারা দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘরের নামকরণ হয় ‘বীর নিবাস।
অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পের ঘর নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করেছেন ঠিকাদার। প্রশাসন কোনো তদারকি করেনি। ঘর ভেঙে পড়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বরাদ্দ পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
বেতাগী উপজেলায় প্রথম ধাপে নয়টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা। গত ৪ নভেম্বর নির্মাণ কাজের উদ্ধোধন করে উপজেলা প্রশাসন।
যে ঘরটি ভেঙে পড়েছে সেটি বেতাগী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম ফারুক শিকদারের জন্য বরাদ্দ করা ছিল।
রেজাউল করিম অভিযোগ করে বলেন, ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। শেষ বয়সে এসে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার ভোগ করতে পারব কিনা সন্দেহে আছি। আমার মনে হচ্ছে ঠিকাদার রড-সিমেন্ট ঠিকমতো দেয়নি। সিমেন্ট কম দিয়ে বালু বেশি দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মূল ঠিকাদার মুনাফা নিয়ে কাজ বিক্রি করে দিয়েছে অন্য এক ঠিকাদারের কাছে। এভাবে কাজ বিক্রি করলে কাজের মান ভালো আশা করা যায় না। তাছাড়া উপজেলা প্রশাসন কাজের তদারকি করতে আসেনি। তারা কাজের তদারকি করলে এত খারাপমানের কাজ করতে সাহস পেত না।
সূত্রে জানা গেছে, ‘বীর নিবাস’ প্রকল্পের কাজটি পান পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার নাসির আহমেদ। কিন্তু তার কাছ থেকে ওই দরপত্রের প্রাক্কলনটি কিনে নেন বেতাগী উপজেলার নাসির এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী তরিকুল ইসলাম নাসির।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিমের ছেলে সুজন শিকদার জানান, নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করতে দেখে ঠিকাদার নাসিরকে পরিবর্তন করে দিতে বলি। কিন্তু তিনি সেগুলোই ব্যবহার করেন।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার তরিকুল ইসলাম নাসির বলেন, আমার কাজ শেষপর্যায়ে এবং দরপত্রের প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। যে অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন।
নির্মাণকাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান জানান, মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপহারের ঘর নির্মাণে কোনো অনিয়ম হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, আমি ইতোমধ্যে অভিযোগ পেয়েছি। ঠিকাদারকে তলব করা হয়েছে এবং অভিযোগের সত্যতা প্রমাণে সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।