ওসি জায়েদ নূরের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের বিস্ফোরক বার্তা
নিজস্ব সংবাদদাতা
০২ জুলাই, ২০২৫, 10:10 PM

নিজস্ব সংবাদদাতা
০২ জুলাই, ২০২৫, 10:10 PM

ওসি জায়েদ নূরের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের বিস্ফোরক বার্তা
নিজস্ব সংবাদদাতা:- চট্টগ্রামের পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জায়েদ নূরের বিরুদ্ধে সাংবাদিক হয়রানির অভিযোগ নতুন মোড় নিয়েছে। এক ভুক্তভোগী সাংবাদিক বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিস্ফোরক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে তিনি দাবি করেন, ক্ষমতার পট পরিবর্তনে এক ওসি কিভাবে রাজনৈতিক দালালে পরিণত হতে পারে, সেটাই এখন প্রশ্ন।”
সাংবাদিক জানান, গত বছর তিনি পারিবারিকভাবে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার পথে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে তাকে মিথ্যা অভিযোগে আটক করা হয়। পটিয়া থানার ওসি জায়েদ নূর কর্তৃক ‘বহু মামলার আসামি’ বলে মিথ্যা তথ্য দেয়ার ফলে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটকে রাখতে বাধ্য হয়।
পরের দিন, কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই তাকে চারটি পুরনো মামলায় ‘অজ্ঞাত’ আসামি হিসেবে দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হয়। তিনি ২৩ দিন জেলে ছিলেন এবং পরে জামিনে মুক্তি পান।
সাংবাদিকের পোস্টে আরও যা উঠে এসেছে: “আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলাম না। শুধু একজন সাংবাদিক ও সংগঠক। আমার বিরুদ্ধে এসব প্রতিহিংসামূলক কাজ রাজনৈতিক প্রভাবে হয়েছে। ওসি জায়েদ নূর নিজেকে কখনও আওয়ামী লীগ, কখনও বিএনপি, কখনও জামায়াত ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে তুলে ধরে। যার কাছে টাকা, তাকেই তিনি বাঁচান। আর বাকিদের জন্য মিথ্যা মামলা আর হয়রানি।”
তিনি আরও লেখেন, “ওসি সাহেব শুধু আমাকেই না, আরও একজনকে মামলা দিয়ে চালান দিয়েছেন। এছাড়া বেশ ক’জন সাংবাদিককে মামলার ভয় দেখিয়েছেন। কয়েকজন জিডিও করেছেন। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির জোরে এখনও বহাল তবিয়তে টিকে আছেন।”
সাংবাদিক প্রনব বড়ুয়া অর্নব জানান, ওসি জায়েদ নূরের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি সম্প্রতি জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে, এই বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। তবে বিষয়টি দামাচাপা দিতে ওসি তার সর্বচ্চো ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, “সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়। সত্য বলার অধিকার রক্ষায় আমি আপস করিনি, করবো না।”
এদিকে এই স্ট্যাটাস এমন এক সময় এল, যখন পটিয়ায় ওসি জায়েদ নূরের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন তীব্র আকার নিয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে পুলিশের লাঠিচার্জে ২৫ জন ছাত্র আহত হন। বুধবার সকাল থেকে আট ঘণ্টা ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম দাবি ছিল, ওসি জায়েদ নূর, সার্কেল এসপি আরিফ ও থানার সেকেন্ড অফিসার আসাদের অপসারণ। ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলনকারীরা সাময়িকভাবে অবরোধ স্থগিত করলেও, তাদের হুঁশিয়ারি—দাবি না মানলে এবার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে।
তবে চট্টগ্রাম রেঞ্জের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি সঞ্জয় সরকার জানিয়েছেন, পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরের অপসারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে দেয়া হবে।