NL24 News
০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 10:11 AM
উত্তরাঞ্চলে ভরদুপুরেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলেছে যানবাহন
নিজস্ব প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে শীতের দাপটে জবুথবু অবস্থা। ঘন কুয়াশায় চারদিক ঢেকে গেছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
ভরদুপুরেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলেছে যানবাহন। সড়কে, হাট-বাজারে মানুষের আনাগোনা কমে গেছে। শীতজনিত রোগবালাইও বেড়ে গেছে। বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের কষ্ট।
দিনাজপুরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা। ঘনকুয়াশায় সূর্যের দেখা না পাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে বহুগুণে। মাঝখানে বৃষ্টি ঝরিয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর বলছে, এ অবস্থা চলবে আরও দুই-তিন দিন।
আগামী দু’তিন দিন তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে উপকূলের জেলাগুলোতে শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেটে হালকা বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। তবে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় শীতের প্রকোপ বাড়তে পারে।
তবে মঙ্গলবার দেশের কয়েকটি এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। এই পরিস্থিতির কারণে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকা ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা এবং এছাড়া দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক যুগান্তরকে বলেন, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এই অবস্থায় শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার একই স্থানে দেশের এবং এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল, যা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পঞ্চগড়: হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়ে গত পাঁচ দিন ধরে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানিয়েছেন, আগামী ৩-৪ দিন এখানে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। চলমান মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অপরিবর্তিত থাকতে পারে আরো কয়েকদিন।
কুড়িগ্রাম: শীতের তীব্রতার ফলে বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, শীতজনিত রোগে প্রতিদিন হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে।
নীলফামারী: আবহাওয়া অফিস নীলফামারীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলার খবর দিয়েছে। মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তিস্তাবেষ্টিত এলাকার মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। খালিশাচাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা গ্রামের শামসুল ইসলাম জানান, ‘খিব ঠান্ডা। দিন কাটায় যায়ছে না। হাড্ডিত নাগেছে ঠান্ডা। সাথে বাতাস কাহিল করি ফেলাইছে হামাক। বেলা গড়ি গেইলেও সূর্যের দেখা যায়ছে না।
হাকিমপুর (দিনাজপুর): দিনাজপুরের হিলিতে একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে তাপমাত্রা, সেই সঙ্গে রয়েছে বৃষ্টির সম্ভাবনা। মঙ্গলবার তাপমাত্রা ছিল ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর রাত থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ঘনকুয়াশার চাদরে ঢেকে ছিল হিলির জনপদ। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে সকল প্রকার যানবাহন। কষ্টে রয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন জানান, মঙ্গলবার দিনাজপুরে সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ৮৯ শতাংশ, বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩-৪ কি.মি.।
রাতের তাপমাত্রা অল্প অল্প করে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। আকাশে মেঘের উপস্থিতি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে সেইসঙ্গে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি বা এর আশপাশে দেশের কিছু কিছু স্থানে আবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির পর শীত আরও বাড়তে পারে।