অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে আগুনের ছ্যাঁকা, ৯৯৯ এ কল দিয়ে উদ্ধার
২৯ জুন, ২০২২, 4:39 PM

NL24 News
২৯ জুন, ২০২২, 4:39 PM

অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে আগুনের ছ্যাঁকা, ৯৯৯ এ কল দিয়ে উদ্ধার
যৌতুকের জন্য দুই মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূ লিজা আক্তারের (২২) ওপর অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে তার স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। জ্বলন্ত চুলার কাঠের লাকড়ি দিয়ে ওই গৃহবধূর হাতের বিভিন্ন অংশ আগুনে পুড়িয়ে দেন স্বামী আবুল বাসার (২৮) ও শাশুড়ি নাজমা আক্তার। এরপর ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নে হিম্মতনগর গ্রামে গত সোমবার ২৭ জুন বিকেলে এ লোমহর্ষক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। রাজমিস্ত্রী আবুল বাসার ওই গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে ও লিজা আক্তার একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের চল্লিশা কাউরাট গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের মেয়ে।
প্রায় চার বছর আগে পারিবারিকভাবে লিজা ও আবুলের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর ভাই নূর মোহাম্মদ জানান, বিয়ের পর থেকেই তার বোন লিজার ওপর যৌতুকের টাকার জন্য প্রতিনিয়ত নির্যাতন করতো তার স্বামী। এ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিশ-দরবার হয়েছে। কিন্তু এতেও কোনো প্রতিকার হয়নি। কিছুদিন ঠিক থাকার পর সম্প্রতি আবুল বাসার ফের যৌতুকের টাকার জন্য তার বোনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে না পারায় সোমবার বিকেলে লিজার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনার পরদিন নূর মোহাম্মদ বোনকে উদ্ধারের জন্য আবুল বাসারের বাড়িতে গেলে সেখানে তাকেও মারধর করা হয়। পরে ৯৯৯ এ কল দিলে গৌরীপুর থানার পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল বাসার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার স্ত্রী রান্না করার সময় পা পিছলে পড়ে যায়। এ সময় চুলার জ্বলন্ত লাকড়ির আগুন লেগে তার হাতের একটু অংশ পুড়ে গেছে।
গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার রুমা বিশ্বাস জানান, অন্তঃস্বত্ত্বা লিজার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও হাতে আগুনের ছ্যাঁকার ক্ষত রয়েছে। তার রক্তক্ষরণ হয়েছে।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, ৯৯৯ থেকে কল আসার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।