NL24 News
১৬ জুন, ২০২২, 4:32 PM
‘আমার কি রাগ হয় না, গোসসা হয় না’
তারকা দম্পতি ওমর সানী-মৌসুমীকে নিয়ে ঘটে যাওয়া চলমান ঘটনায় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির খুব ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেছেন শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। গতকাল বুধবার রাতে এ কথা জানান ‘নিরাপদ সড়ক চাই’র প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান এই চিত্রনায়ক। তিনি বলেন, ‘শিল্পীদের প্রতি ভক্ত-দর্শকের প্রবল আকর্ষণ রয়েছে এবং অনেকেই শিল্পীদের আইডল মনে করেন। তাই তাদের যেকোনো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড বা অপকর্ম শিল্পীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। ’
শিল্পী সমিতির সভা কক্ষে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন,‘আমাদের শিল্পীদের খুব সতর্ক থাকতে হয়। চলাফেরা, কথাবর্তা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই খুব সবধানে থাকতে হয়। কারণ, আমাদের অনেকেই অনুসরণ করে। প্রতিটি শিল্পীর এই বিষয়টি মনে রেখে এগুতে হবে। দুনিয়াতে তো এক রকম মানুষ হয় না। অনেক রকমের মানুষ, যার যার চিন্তা-ভাবনা আলাদা। আমাকে দেখুন, আমি সব সময় পজিটিভভাবে চলাফেরা, কথাবার্তা বলি, চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি। চলচ্চিত্রকে যখন ভালো বাসবেন, তখন শিল্পীদের অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। আমার কি রাগ হয় না, গোসসা হয় না। আমি তো অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করি। আমি মনি করি, শিল্পীদের এগুলো মনে রাখা দরকার।‘
সম্প্রতি ওমর সানী সমিতি বরাবর জায়েদ খানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সমিতি কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে? জানতে চাইলে বরেণ্য এই অভিনেতা বলেন, ‘দেখুন আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি সমিতির সিদ্ধান্ত হয় সবার সম্মতিক্রমে। এখানে আমার একার কোনো মত বা সিদ্ধান্ত না। এর মধ্যে ওমর সানীর অভিযোগপত্রটি আমরা পেয়েছি। জবাব দেওয়ার জন্য আগামী সভায় সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর মধ্যে আবার ওরা (সানী) ব্যারিস্টারের মাধ্যমে জবাব দিয়েছে। আমরা আইনগত বিষয়গুলো নিয়ে এভাবেই কথা বলতে পারি না। আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। এর আগে কিছু বলা যাবে না।’সিনেমার উন্নয়নে আপনাদের আগামী কার্যক্রম কী? উত্তরে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আপনার হয়তো সম্প্রতি দেখেছেন আমি অনেকগুলো ছবির মহরত বা অনুষ্ঠানে গিয়েছি। এসব ছবিতে কিন্তু আমি অভিনয় করিনি, তারপরও কিন্তু তাদের উৎসাহ দিতে শত ব্যস্ততার মধ্যেও অংশগ্রহণ করছি। এতে করে শিল্পী, নির্মাতা ও প্রযোজকরা উৎসাহিত হচ্ছেন। আর সবাইকে আহ্বান করছি, আপনারা এই ইন্ডাস্ট্রিতে ভালো ভালো কাজ উপহার দিয়ে যান। আর এজন্য আমাদের যত ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন আমরা করব। ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের বিষয়ে আমরা কিছু রোডম্যাপ তৈরি করেছি। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবার সহযোগিতা পেলে নিশ্চই আমাদের এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে। ইদানিং হুটহাট করে শিল্পীরা লাইভে চলে আসেন। নানা ধরনের বিতর্কিত কথা বলে থাকেন। যা ইন্ডাস্ট্রিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব নিয়ে আপনারা কিছু ভাবছেন? ইলিয়াস কাঞ্চনের ভাষ্য, ‘শিল্পীরা যদি নিজেদের সুশৃঙ্খল ও আচরণে সংযত এবং মর্যাদা বজায় রেখে চলেন, তাহলে অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো কমে আসবে। আর কোনো বিষয় নিয়ে হুটহাট করে স্যোশাল মিডিয়া চলে আসা, কিছু বলা বা অন্যর কথায় গিয়ে খোঁচা দেওয়া-এসব নিয়ে তাদের ভেবেচিন্তে চলতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, শিল্পীদের ঘটনা সবচেয়ে বেশি দ্রুত ছড়ায় এবং মানুষের আগ্রহও সবচেয়ে বেশি। তাদের ছোট্ট ঘটনাও অনেক বড় হয়ে দেখা দেয়। এই দেখেন মৌসুমী-সানীর ঘটনায় মানুষ কত শত কথা বলেছে। ভালো, খারাপ দু’ধরনের কথাই হয়েছে। এর মধ্যে মানুষ মন্দ বিষয়গুলো আনন্দ নিয়ে গ্রহণ করেছে। যার করণে অন্য শিল্পীদের নিয়েও মানুষের নানা নেচিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। শিল্পী সমাজের মান-মর্যাদা রক্ষায় এসব থেকে শিল্পীদের বিরত থাকতে হবে। আমরা এসব বিষয়ে সভায় প্রায়ই কথা বলে থাকি। সবাইকে অনুরোধ করব- কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য বা শিল্পীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পরে এসব কাজ থেকে বিরত থাকার।’