নিজস্ব সংবাদদাতা
২১ অক্টোবর, ২০২৪, 11:45 AM
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন শুনেছি, প্রমাণ নেই: রাষ্ট্রপতি
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন বলে শুনেছেন, তবে তার কাছে এ বিষয়ে কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি এই মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারটি শনিবার পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সংস্করণ ‘জনতার চোখ’-এ প্রকাশিত হয়।
মতিউর রহমান চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র যদি সত্যিই জমা দেওয়া হয়ে থাকে, তবে সেটির অনুলিপি কারও না কারও কাছে থাকার কথা। তিন সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধান চালানো হলেও, কেউ এর খোঁজ দিতে পারেনি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেও যোগাযোগ করা হয়েছে, যেখানে সাধারণত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র সংরক্ষিত থাকে, তবে সেখানেও কিছু পাওয়া যায়নি। শেষমেশ রাষ্ট্রপতির কাছেই এ বিষয়ে উত্তর জানার চেষ্টা করা হয়।
৫ আগস্ট ছাত্র-আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন। সংবিধানের ৫৭ (ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হয়। রাষ্ট্রপতি জানান, শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র বা সংশ্লিষ্ট প্রমাণ তার কাছে পৌঁছায়নি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বহুবার পদত্যাগপত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সফল হইনি। হয়ত এখনো সময় আসেনি।’
সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন বলে জানানো হয়েছিল, কিন্তু পরে তা বাতিল করা হয়। এরপর তিনি বিভিন্ন দিক থেকে অনুসন্ধান চালিয়েছেন, তবে কোনো প্রমাণ মেলেনি।
সাক্ষাতের সময় সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারকেও জিজ্ঞাসা করা হয়, কিন্তু তিনিও একই ধরনের উত্তর দেন। অবশেষে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবও পদত্যাগপত্র সংগ্রহে এসে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
রাষ্ট্রপতি জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন, এটাই বাস্তবতা। তবে যাতে এ প্রশ্ন আর না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে আমি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছি।’ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট এক মতামতে বলেন, সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে এবং রাষ্ট্রপতি উপদেষ্টামণ্ডলীকে শপথ করাতে পারেন।