ব্রিটেনে পাকিস্তানিদের মধ্যে কাজিন বিবাহ কমছে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৩ অক্টোবর, ২০২৪, 12:04 PM

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৩ অক্টোবর, ২০২৪, 12:04 PM

ব্রিটেনে পাকিস্তানিদের মধ্যে কাজিন বিবাহ কমছে
১৯৯০ সালে পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যে আসা ব্রিটিশ-কাশ্মীরী শাগুফতা রাশিদের জীবনে কাজিন বিয়ে ছিল স্বাভাবিক। তিনি তার স্বামীকে বিয়ের আগে ভাই হিসেবেই জানতেন। তারা যুক্তরাজ্যে পাঁচ সন্তানসহ সুখী জীবনযাপন করছিলেন। কিন্তু তার মেয়ের চোখের সমস্যা দেখা দিলে শাগুফতার জীবন এক দুঃখজনক মোড়ে ঘুরে যায়। কিছুদিন পরেই তার মেয়ে দৃষ্টিশক্তি হারায়। চিকিৎসকরা জানান যে, মেয়ের এমন একটি জেনেটিক সমস্যা আছে, যা কাজিন বিবাহের কারণে হতে পারে।
শাগুফতার বোন সাবিহা হাসানের জীবনেও এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার সন্তানদের মধ্যে একজন অটিজমে আক্রান্ত। তারা বুঝতে পারেন, পরিবারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিবাহের কারণে এমন জেনেটিক সমস্যার সম্ভাবনা থাকে।
কাছের আত্মীয়দের মধ্যে বিবাহকে কনস্যাংগুইন ম্যারেজ বলা হয়। যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডে পরিচালিত এক গবেষণা বলছে, পাকিস্তানি পরিবারগুলির মধ্যে এমন বিবাহ শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ হতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, এই ধরনের বিবাহের ফলে গুরুতর জেনেটিক রোগ দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যারা একই সংস্কৃতিতে এমন বিবাহকে গ্রহণ করে।
কিন্তু নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই ধরনের বিবাহের প্রতি অনীহা বাড়ছে। শাগুফতা ও সাবিহা মনে করেন, প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্য সচেতনতা এই পরিবর্তনের পেছনে কাজ করছে। সোশ্যাল মিডিয়া ও খোলামেলা আলোচনা তরুণদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করছে।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক ব্রিটিশ পাকিস্তানি নারী বলেন, কাজিন বিয়ে পরিবারের চাপ নয়, ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। তার ছেলে কাজিনকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেছিল। তিনি তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, যদিও পরিবারের অন্যরা তা সমর্থন করেনি।
তবে সমাজকর্মী বীনাশ ফারিসের মতে, ধর্মীয়ভাবে বিশ্বাসী পরিবারগুলোতে এখনো কাজিন বিবাহ প্রচলিত রয়েছে। যদিও সামগ্রিকভাবে এই প্রবণতা কমছে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে