নিজস্ব সংবাদদাতা
০৯ জানুয়ারি, ২০২২, 8:12 PM
দেশে গনতন্ত্রের চর্চা আছে বলেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে-হুইপ সামশুল হক চৌধুরী
মোরশেদ আলমঃ- সদ্য প্রয়াত পটিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি হারুনুর রশীদের শোক সভায় হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি বলেছেন, গণতন্ত্রের শত্রুরাই গণমাধ্যমের শত্রু। এই শত্রু হচ্ছে তারা, যারা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করতে চায় এবং লুটেরাতন্ত্র কায়েম করতে চায়। তারা স্বাধীন গণমাধ্যমকে প্রতিপক্ষ মনে করে। দেশে গণতন্ত্রের চর্চা আছে বলেই আজ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে। বর্তমানে বাংলাদেশে বিদ্যমান গণমাধ্যমের সংকট নিরসনে মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।
হুইপ বলেন, যে দেশে গণতন্ত্র থাকে না, সে দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও থাকে না। আমাদের সংবিধানে বাক স্বাধীনতার কথা উল্লেখ থাকলেও কেউ সেটা মানছে না বরং গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যেখানে সত্য প্রকাশেই বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সাংবাদিকের কলম স্বাধীন নয়, সেটি কাজ করছে ওপর মহলের নির্দেশে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে তিনি গণতন্ত্রের চর্চার উপর জোর দেন।সাংবাদিকতা এখন বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে। সরকার এবং মালিকপক্ষের অনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় এখন মড়ক ধরেছে।
রবিবার বিকেলে সদ্য প্রয়াত পটিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি হারুনুর রশীদের শোক সভার আয়োজন করেন পটিয়া প্রেস ক্লাব।
বাক স্বাধীনতা নিয়ে আজ লেখক-সাংবাদিকরা চরম সংকটে রয়েছেন উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এখন কথা বলতেও ভেবেচিন্তে বলতে হচ্ছে। পরিস্থিতির কারণে শুধু গণমাধ্যমই নয়, নাগরিকরাও নিজেরাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে। কিছু লিখলে বা বললে সরকারের বিরুদ্ধে যায় কিনা, প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে যায় কিনা, এটি এখন বড় সংশয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পটিয়া প্রেস ক্লাবের কার্যকরি সভাপতি নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম রানা ও শোক সভা প্রস্ততি কমিটির সদস্য সচিব আহমদ উল্লাহ'র সঞ্চালনায় শোক সভায় অংশ নেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, পৌর মেয়র মো. আইয়ুব বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিব হোসেন, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা চেয়ারম্যান সামসুল আলম, মুক্তিযোদ্ধা তাজুল মুল্লুক, ভাইস চেয়ারম্যান তিমির বরণ চৌধুরী, মাজেদা বেগম শিরু, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা প্রদীপ দাশ, মুক্তিযোদ্ধা আহমদ নুর, পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম মজুমদার, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আলমগীর আলম, মোহাম্মদ ছৈয়দ চেয়ারম্যান, পটিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক, সাংবাদিক আনোয়ারুল হক, এস কে এম নুর হোসেন, অভিজিৎ বড়ুয়া মানু, কাউন্সিলর সরওয়ার কামাল রাজিব, অধির বড়ুয়া, অরুন কুমার মিত্র, প্রয়াত হারুনুর রশীদ সিদ্দিকীর ছেলে ইসরাক সিদ্দিকী, মাস্টার শ্যামল দে প্রমুখ।
হুইপ আরো বলেন , হারুনুর রশীদ ছিলেন সৎ, সাহসী ও নির্ভীক সাংবাদিক। তার মৃত্যু পটিয়ার সাংবাদিক সমাজের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। জাতির এই ক্রান্তিকালে তার মতো সৎ, সাহসী ও নির্ভীক সাংবাদিক নেতার খুব প্রয়োজন ছিল।
তিনি বলেন, হারুনুর রশীদ সাংবাদিক হিসেবে বরাবরই পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। সাংবাদিকতাকে ব্যবহার করে তিনি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে চাননি। নীতির প্রশ্নে তিনি কখনো আপোষ করেননি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় অকপটে সত্য বলতে পারতেন। মেরুদণ্ড সোজা করে হাটার মতো সাংবাদিক কমই আছেন, হারুন তেমন এক ব্যক্তি। তিনি গণতন্ত্র, মুক্তিযোদ্ধের জন্য, মুক্তমতের জন্য, কথা বলার স্বাধীনতার জন্য, সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
সভায় সহকর্মী সাংবাদিকেরা বলেন, হারুনুর রশীদের মৃত্যু আমাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তার মৃত্যু আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। সাংবাদিক সমাজ তার অবদানের কথা কোনো দিন ভুলবে না। আমরা তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করে এজন্য দোয়া করছি।