ঢাকা ১৭ অক্টোবর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
দক্ষিণ ভূর্ষি শীতলা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাঞ্চন নাথ, সম্পাদক সুমন দেবনাথ “টাইফয়েড এখনো মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা"—সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম “টাইফয়েড এখনো মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা"—সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উত্তেজনা: ছাত্রদল কমিটিতে ‘শিবির সংশ্লিষ্টতার' অভিযোগ পটিয়ায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করতে সমন্বয় সভা পটিয়ায় ভূমি অফিসে দালালবিরোধী অভিযান, এক যুবকের সাজা ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৪২ পটিয়ায় একই দিনে অজ্ঞান পার্টির প্রতারণা ও দরজা কেটে ১৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে স্বর্ণালংকার- নগদ টাকা হারালেন বৃদ্ধা পটিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় দুই চুরি, এক আত্মহত্যা : চরম উৎকন্ঠায় স্থানীয়রা

করনীতি, বিলাসী জীবন, স্ত্রীর অঢেল সম্পদে ডুবলেন সুনাক

#

০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২,  3:57 PM

news image

সুনাক কেন পরাজিত হলেন : 

বরিস জনসনের পদত্যাগ করার ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে সুনাক একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। আর সেটির শিরোনাম ছিল ‘ঋষির জন্য প্রস্তুত হও।’এটি প্রাথমিকভাবে তাঁকে সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু এই ভিডিওর ফলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর আস্থার সংকট তৈরি হয়েছিল। কারণ বরিস জনসনকে সরানোর পেছনে সুনাকেরই বেশি ভূমিকা ছিল ।

নিজের দলের ভেতরে প্রথমদিকে সুনাকের প্রতি অনেক বেশি সমর্থন ছিল। তবে পরে সাজিদ জাভিদ, নাদিম জাহাওয়ি এবং মরডন্টের সমর্থন হারান সুনাক। অন্য এমপিরাও সুনাকের প্রতি সমর্থন তুলে নেন। অন্যদিকে লিজের প্রতি সমর্থন বাড়তেই থাকে।


বরিস জনসনের পদত্যাগের পরই সুনাকের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। তবে স্ত্রীর অঢেল সম্পদ নিয়ে বিতর্ক, বিলাসবহুল জীবনযাপন, অর্থবিভাগের অবস্থা, করনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুনাকের ভাবমূর্তি নিয়ে বিতর্কও চলে। ইউগভের জরিপ বলছে, করনীতি ও অর্থ বিভাগের অবস্থা, আস্থার অভাব ও জনসাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকার কারণে সুনাকের প্রতি অনেকের সমর্থন কমেছে।


দ্যা গার্ডিয়ানে লেখা এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে যদিও দীর্ঘদিন ধরে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুনাকের নাম শোনা যাচ্ছিল তবু তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী লিজ ট্রাস ছিল অনেক বেশি শক্তিশালী। থ্যাচারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তাঁর ভূমিকা ছিল।


কেন জনপ্রিয়তা কমে গেল সুনাকের?

সুনাকের একটি ভিডিও হঠাৎ করেই সামনে আসে। তাতে সুনাক অনুন্নত শহরাঞ্চলের বরাদ্দ করা অর্থ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। বঞ্চিত নগর এলাকা থেকে কেন্ট কমিউটার বেল্টে অর্থ স্থানান্তর করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে দেওয়া সুনাকের বক্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়। যুক্তরাজ্য সরকার দক্ষিণ-পূর্ব ব্রিটেনের বাইরে সম্পদের সুষম বন্টনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ঋষি সুনাকের এ ধরনের পদক্ষেপে সেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের মনে অনাস্থা তৈরি হয়। সুনাকের জনপ্রিয়তায় আরও ভাটা পড়ে সানডে টাইমস রিট লিস্ট ম্যাগাজিনে খবর প্রকাশের পর। সেখানে ধনীদের তালিকা অনুসারে সুনাকের স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সম্পদ ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথের চেয়ে বেশি বলে প্রকাশিত হয়। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৪৩ কোটি ডলার। ওয়েস্টমিনস্টারের প্রথম কোটিপতি দম্পতি হিসেবে তাঁদের নাম আসে। লেবার পার্টি ব্যবসার জন্য সুনাককে ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতার দাবি তোলে। 

গার্ডিয়ানের খবর বলছে সুনাক এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। ভারতের বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইনফোসিসের ৬৯ কোটি মূল্যের ০.৯৩ শতাংশ শেয়ারের মালিক সুনাকের স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি।


ওই পত্রিকার খবরে আরও বলা হয়, অক্ষতা ভারতীয় নাগরিক হওয়ায় যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে কর দিত বাধ্য ছিলেন না। ফলে তিনি ইনফোসিসে শেয়ারের লাভ থেকে প্রায় দুই কোটি পাউন্ড কর বাঁচান। সমালোচকেরা বলেছেন সুনাকের স্ত্রী কর ফাঁকি দিচ্ছেন। অথচ তিনি দরিদ্রদের কাছ থেকেও কর আদায় করছেন। 


আরও বিপদ বাড়ে যখন জানা যায় সুনাক যুক্তরাজ্যে ফেরার পরও যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড রেখেছিলেন। ফলে কনজারভেটিভ দলে তাঁকে নিয়ে এক ধরনের আস্থার সংকট তৈরি হয়।


সুনাকের দামি জামাকাপড় ও বিলাসবহুল বাড়ির জন্য সমালোচকেরা তাঁকে সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে মন্তব্য করেছেন।

ঋষি সুনাক এখন কী করবেন

নির্বাচনে পরাজয়ের কিছুক্ষণ পরেই সুনাক জয়ী প্রার্থী লিজ ট্রাসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। টুইটে সুনাক বলেছেন, এখন আমাদের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের পাশে থাকতে হবে। কারণ তাঁকে কঠিন সময়ে দেশ পরিচালনা করতে হবে।

সুনাক আরও বলেন ইয়র্কশায়ারে রিচমন্ড এলাকায় এমপি হিসেবে তিনি দায়িত্বপালন করবেন। তিনি বলেন, রিচমন্ডের জনগণ তাঁকে চাইবেন তত দিন তিনি তাদের পাশে থাকবেন।

সুনাক ভবিষ্যতে কনজারভেটিভ দলের নেতা হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেন ‘সবে আমরা নির্বাচনী প্রচার শেষ করেছি। আমাদের পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে।’

সুনাক আরও বলেন কে জিতেছে কে হেরেছে তার চেয়েও বড় কথা এবারের নির্বাচন অনুপ্রেরণামূলক হয়েছে। কারণ অধিকার আদায় ও বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছেন তাদের কেউ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে এক ধরনের আশাবাদ তৈরি হয়।


প্রথম আলো 

logo

প্রধান সম্পাদক : হেফাজুল করিম রকিব

সম্পাদক : নূরুন্নবী আলী