ওসির নাম আলফু মিয়া’ : 'তানভীর আলাদিন উপন্যাস লেখেন তার নিজের ঢংয়ে'
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 1:16 PM

NL24 News
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 1:16 PM

ওসির নাম আলফু মিয়া’ : 'তানভীর আলাদিন উপন্যাস লেখেন তার নিজের ঢংয়ে'
হাবিবুর রহমান বাবু:- তানভীর আলাদিন উপন্যাস লেখেন তার নিজের ঢংয়ে। তিনি কোনো গতানুগতিক নিয়ম বা ধারা অনুসরণ করেন বলে মনে হয় না। স্বকীয় ও স্বাধীন এ লেখকের লেখায় যেমন ফিউশনে ভরা, তেমন থাকে ট্র্যাজেডির পাঞ্চ। লেখকের অন্যান্য উপন্যাসের মতোই ‘ওসির নাম আলফু মিয়া’তেও নায়িকা কিন্তু সেই হৃদিতা। তারপরও এটি ব্যতিক্রম না হলেও একটু অন্যরকমতো বটেই।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলফু মিয়া মুক্তিযুদ্ধের আগেও পরে ছিলেন চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার ওসি। তাঁকে নিয়ে ইতিহাস নয়, এটি উপন্যাস মাত্র, এখানে তাঁকে ঘিরে মুক্তিযুদ্ধের একটুকরো ছায়া মাত্র ফুটে উঠেছে মাত্র। বিচিত্র্য চরিত্রের অধিকারী আলফু মিয়ার আরেকটি পরিচয়, রাষ্ট্রপতি জিয়া হত্যাকাÐকে কেন্দ্র করে গঠিত কোর্ট মার্শালে যে ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর কাজী মমিনুল হকের পিতা। কুমিল্লা জেলার বুড়িচংয়ের মহিষমারার সন্তান আলফু মিয়াকে ঘরে ও বাইরে দুটি মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছিল সমানতালে। এ যেনো অন্য রকম পরিবেশে ভিন্ন রকম চরিত্রের কোনো এক সাহসী প্রেমিক প্রবরের আখ্যান। তাকে জানতে চাইলে চলুন- ঘুরে আসি এই প্রজন্মের চৌকস সাংবাদিক সোপান মজুমদারের যাপিত জীবনের অলিগলিতে। সোপান হাঁটতে-হাঁটতে আপনাকে নিয়ে পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে।
এখানেই ফাইভ-জি গতির সোপানের সঙ্গে হিমালয় কন্যা হৃদিতা রানা মাগার আর স্বদেশীনি ষ্মিতা চৌধুরীর রসায়নের ফিউশনে পাঠক জড়িয়ে যাবেন গল্পের ফেভিকলে। এমন কি রাজধানী ঢাকার ইট-পাথুরে জঙ্গল মাড়িয়ে কুমিল্লার পয়ালগাছা থেকে লালমনিরহাটের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতাসহ পাঠক কিছুটা সময়ের জন্যে হারিয়ে যাবেন টিকিট ভিসা ছাড়াই ভারতের নৈনিতাল থেকে নেপালের কাঠমান্ডুর মতো অচেনা শহরের রঙিন জনপদে।
তবে উপন্যাসের গল্পে কিন্তÍু লেখৈকের নিজের শহর ফেনীর পাঠকের জন্যেও রেখেছেন টুইস্ট, যেমন- “...আজ অনেক দিন পর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে এসেছে সোপান মজুমদার। যদিও একসময় এখানে তার নিয়মিত আড্ডা হতো। আজ এসেছে অনুরোধে ঢেঁকি গেলা অবস্থায় পড়ে। কারণ বাবার চাকরির সূত্রে সোপান আজ থেকে বছর আটেক আগে ফেনী শহরে ছিল। ফেনী সরকারি কলেজে প্রথম বর্ষে পড়াকালে সে ওস্তাদ মিহির লালা আর সমর দেবনাথের তত্ত¡াবধানে আর্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে তবলা ও গিটার বাজানোর তালিম নিয়েছিল।
গতকাল তাকে সমর দাদা ফোন করে জানিয়েছিলেন, সেগুনবাগিচাস্থ শিল্পকলায় আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০১৯ অনুষ্ঠিত হবে। ওখানে আগামীকাল আর্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের অনুষ্ঠান আছে, অবশ্যই তাকে থাকতে হবে। তাইতো আসা।
অনুষ্ঠান শেষে সমর দাদা শুধালেন, তা কেমন লাগল সোপান?
―মাইন্ডবেøাইং। দাদা এই মেয়েটি কে? অবিকল যেন হিমালয় কন্যা হৃদিতা রানা মাগার!
―স্মিতা, তোমার মতোই।
―আমার মতো মানে?
―স্মিতা আর তুমি বা তোমরা হচ্ছ মফস্বলের দুঃখ। কিছুদিনের জন্য মফস্বলে আসো, মায়ায় জড়াও, মায়া বাড়াও, ফের পাখির মতো ফুড়ুৎ। স্মিতার মা ফেনীতে অধ্যাপনা করেন, বদলির চাকরি, যেকোনো সময় ফেনী ছেড়ে চলে যেতেও পারেন। তার বাবা-মায়ের সেপারেশন চলছে। তা ছাড়া স্মিতা খুবই মেধাবী। সে ক’দিন আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অনার্সে ভর্তির চান্স পেয়েছে।
―ফাইন।
―ফাইন মানে?
―না মানে, ও তো তাহলে সাংবাদিক হতে চায়।
―সেটাই তো স্বাভাবিক।
―দাদা, আমি তো স্মিতাতে ফিদা হয়ে গেছি, আমি আমার হৃদিতাকে খুঁজে পেয়েছি! ওর সঙ্গে আমার একটু খাতির করিয়ে দাও না দাদা। তা ছাড়া আমাদের পেশা যেহেতু এক হতে যাচ্ছে, তাহলে আমি তো তার কাজেও লাগতে পারি।
―আমার টিমের সবাই তোমাকে নামে জানে সোপান। আজ তুমি এখানে আসতে পারো সেটিও অনেকেই জানে। তা তোমার মতলবটা কী সোপান?
―কসম দাদা, কোনো বদ মতলব নেই। ও আমার হৃদিতা হয়েই থাকবে...।”
সাহিত্যদেশ থেকে প্রকাশিত বাসসের সিনিয়র সাংবাদিক তানভীর আলাদিনের ‘ওসির নাম আলফু মিয়া’ উপন্যাসের প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী ফাহাদ হাসান কাজমী। উপন্যাসটির গায়ের দাম ২৫০ টাকা। উপন্যাস “ওসির নাম আলফু মিয়া” বইমেলায় সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের ৮৭ ও ৮৮ নম্বর স্টল সাহিত্যদেশে এবং অনলাইনে রকমারি.কম এ পাওয়া যাচ্ছে।