NL24 News
০১ জানুয়ারি, ২০২২, 11:09 PM
২১ এ সারাদেশে আলোচনায় ছিল কক্সবাজার
কক্সবাজার অফিস :
বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় সারাদেশে আলোচনায় ছিল কক্সবাজার।
বিশেষ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর হওয়া, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি মাদ্রাসায় একদিনে ৭ রোহিঙ্গাকে হত্যা, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যা, হাতি হত্যা, সৈকতে তিমি ভেসে আশা ও সর্বশেষ সৈকতে এক নারীকে ধর্ষণ। এ বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো ছিল বছর জুড়ে কক্সবাজারসহ সারাদেশের আলোচিত বিষয়। এসব ইস্যু নিয়ে প্রশাসনকে বছর জুড়েই তৎপর থাকতে হয়েছে।
বর্তমানে মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। মিয়ানমার যাতে তাদের ফিরিয়ে নেয় সেজন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
চলতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। এটা যে বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়, বৈশ্বিক সমস্যা সেটা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য তিনি প্রত্যাবাসনে বিশ্বনেতাদের ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছেন।
১) ভাসানচরে জাতিসংঘের সম্পৃক্ত হওয়া --
রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে সরকারের নির্মিত ভাসানচর প্রকল্পে জাতিসংঘের সম্পৃক্ত হওয়া ছিল ২০২১ সালের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। কিন্তু শুরু থেকেই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলো বাংলাদেশকে।
নানা ঘটনা পরিক্রমায় অবশেষে গত ১৮ অক্টোবর ভাসানচরের শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করতে সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে জাতিসংঘ। সমঝোতা অনুযায়ী সেখানে মানবিক কার্যক্রমের সমন্বয় করবে জাতিসংঘ।
সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, অনেক দিন দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকলেও শেষ পর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে জাতিসংঘ। এটি যেহেতু বড় বাজেটের ব্যাপার সেজন্য লোকাল এনজিওগুলোই চাইছিলো জাতিসংঘ সম্পৃক্ত হোক।
২) রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড-
চলতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের উখিয়ায় লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢুকে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর সারাবিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়। প্রশাসন তৎপর হয়ে সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে। এখন মামলটি বিচারাধীন।
৩)রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৭ হত্যা -
গত ২২ অক্টোবর উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প-১৮ এর এইচ-৫২ ব্লকের একটি মাদ্রাসায় ঢুকে ৭ জনকে হত্যা করেছে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। এই সময় আহত হয়েছে আরো অন্তত ২০ জন রোহিঙ্গা।
৪) জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যা -
গত ৮ নভেম্বর রাতে শ্রমিকলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার ও তার ভাই কুদরত উল্লাহ
এর অফিসে ঢুকে একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইলে এসে তাদের গুলি করে ও কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে জহির মারা যান। এঘটনায় ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও এখনো মামলার মুল আসামীরা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
৫) হাতি হত্যা -
বৈদ্যুতিক শক, ফাঁদ ও দুর্ঘটনায় চলতি বছর জেলায় ছোট বড় অন্তত ৯ টি হাতি মারা গিয়েছে ।
৬) সৈকতে ভেসে আসা তিমি -
চলতি বছরের ৮ ও ৯ এপ্রিল হিমছড়ি দরিয়ানগরের সমুদ্রসৈকতে জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছে দুটি মৃত তিমি। তিমি দুটির ওজন দুই থেকে আড়াই টন । পরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তিমি দুটি বালি চাপা দিয়ে হাড়গুলো সংরক্ষণ করেছেন।
৭) সর্বশেষ সৈকতে এক নারী ধর্ষণকে কেন্দ্র করে এখনো আলোচনায় রয়েছে কক্সবাজার।
এবিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ জানান, কয়েকটি ঘটনায় পুরো বছরজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল কক্সবাজার। এসব ঘটনার কিছু অংশ এখনো চলমান রয়েছে। নতুন বছরে আমাদের সকলের প্রত্যায় হোক সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি।