ঢাকা ২১ নভেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
সেনাকুঞ্জে হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া, যা বললেন ড. ইউনূস ইতিহাসে প্রথম ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হলো রংপুর পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে মামলা, নেপথ্যে কী ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য ভাতা দেবে যুক্তরাজ্য গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আমেরিকায় গ্রেপ্তার ফ্যাসিবাদী বয়ান দেওয়া গণমাধ্যম চিহ্নিত করা হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও ৫ দিনের রিমান্ডে

সাংবাদিক নির্যাতনের নিউজ না করতে অপর সাংবাদিকদের অর্থ দিলেম ইউএনও

#

৩০ ডিসেম্বর, ২০২১,  12:37 AM

news image

আমিন উল্লাহ, কক্সবাজার :কক্সবাজারের চকরিয়ায় দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে সালেম নূর নামে এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসূল তাবরীজ।

সাংবাদিক নির্যাতনের পর এই বিষয়ে সংবাদ প্রচার না করতে অপর সাংবাদিকদের চকরিয়া ইউএনও'র বাসভবনে ডেকে নিয়ে টাকা প্রদান করে অভিযুক্ত ইউএনও তাবরীজ।

এর আগে মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ইউএনও অফিস কক্ষেই  নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক। মারধর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় সালেম নূরকে।

নির্যাতিত সাংবাদিক সালেম নূর কক্সবাজারে স্থানীয় দৈনিক আপন কণ্ঠ পত্রিকা ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম প্রহর পত্রিকার প্রতিনিধি। মারধরে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

ভুক্তভোগী সালেম নূর অভিযোগ করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসূল তাবরীজের ব্যক্তিগত সহকারী মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে বুধবার বিকেলে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। ওই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর সন্ধ্যার ৬টার দিকে ওই দেহরক্ষী ইউএনওর বরাত দিয়ে ফোন করে সালেম নূরকে এক ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও অফিসে যাওয়ার জন্য বলেন। ফোন পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সেখানে যান সালেম নূর।

ইউএনও অফিসে গেলেই সৈয়দ শামসূল তাবরীজ, তার ব্যক্তিগত, কর্মচারী, ইফাত ও কাজল, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার ওসমান গণি তাকে রাবারের পাইপ দিয়ে পেটান। খবর পেয়ে সালেম নূরে স্ত্রী ও মা সেখানে যান। তাদের সামনেও সালেম নূরকে বেড়ধক পেটানো হয়। এ সময় তার মা ইউএনওর পায়ে ধরে ক্ষমা চান বলে দাবি করেন সালেম। তবু ছাড় দেওয়া হয়নি।

মারধর করে ‘ভবিষ্যতে ফেসবুকে এমন পোস্ট দেবেন না’ মর্মে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেন। স্বাক্ষর দিতে না চাওয়ায় ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন সালেম নূর। 

মারধরের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে অস্বীকার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসূল তাবরীজ। তিনি বলেন, সালেম নূরের সঙ্গে সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার ওসমান গণির একটি মামলা ইউএনও অফিসে চলমান রয়েছে। মামলাটির কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চলমান রয়েছে। কিন্তু তা না মেনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের কর্মচারীকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে মিথ্যা স্ট্যাটাস দিয়েছেন সালেম নূর।

সৈয়দ শামসূল তাবরীজ বলেন, এই স্ট্যাটাসের সত্যতা জানার জন্য সালেম নূরকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাকে মারধর করা হয়নি। মারধরের আঘাত সংবলিত যে ছবি ফেসবুকে প্রকাশ হয়, সেগুলো আদৌ প্রকৃত ছবি নয় বলে দাবি করেন এই সরকারি কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী সালেম নূর বলেন, আমার মা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পায়ে ধরে ক্ষমা চাইলেও তা আমলে নেননি তিনি। আমি অপরাধ করে থাকলে তিনি মামলা দিতে পারেন, জেলে দিতে পারেন। কিন্তু মারধরের এখতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেই। আমি এর বিচার চাই।

সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা জানা জানি হলে চকরিয়া উপজেলায় কর্মরত  অন্যান্য সাংবাদিকদের বাসভবনে ডেকে পাঠান অভিযুক্ত ইউএনও তাবরীজ। বাসভবনে উপস্থিত সকলের হাতে একটি করে খাম দেন তার কর্মচারীরা। এমনকি অনুপস্থিত সাংবাদিকদের বাসায় গিয়ে উক্ত খামও পৌছে দেন বলে জানা চকরিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকগণ। খামে করে অর্থ প্রদানের সত্যতা স্বীকার করে চকরিয়া কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিক নিজেদের বিবেকের কাছে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন বলে জানান।

এই বিষয়ে ইউএনও'র সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ এর চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।

logo

সম্পাদক : হেফাজুল করিম রকিব

নির্বাহী সম্পাদক : শাহ এম রহমান বেলাল