NL24 News
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 6:53 PM
বনাঞ্চলের ভেতরে বিদ্যুতের লাইন হুমকির মুখে স্থন্যপায়ী প্রাণীরা
নিজস্ব প্রতিনিধি : বৃহস্পতিবার দুপুরে লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের পাশে একটি চশমাপরা হনুমানের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় বনবিভাগ। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্টেই হনুমানটির মৃত্যু হয়েছে।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে বিদ্যুতের লাইন থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে স্থন্যপায়ী প্রাণীরা। প্রায়ই রিজার্ভ ফরেস্টে বন্যপ্রাণীর মরদেহ পড়ে থাকার খবর পাওয়া যায়।
জানা গেছে, বড়লেখার ডিমাই, বিওসি কেছরিগুল, মাধবছড়া ও জুড়ীর লাঠিটিলায় বনবিভাগের একোয়ার্ড ও রিজার্ভ ফরেস্টে ৪০-৫০ বছর ধরে কয়েক হাজার পরিবার অবৈধভাবে বসবাস করছে। প্রথমে বনজঙ্গল কেটে ছোট ঝুঁপড়িঘর ও পরে সময়ের ব্যবধানে তারা অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ করতে থাকে। এসব অবৈধ বসবাসকারীদের উৎপাতে বন্যপ্রাণীরা আবাসস্থল হারানোর সঙ্গে বনবিভাগের লাখ লাখ টাকার গাছপালাও উজাড় হতে থাকে। বনের ভূমিতে অবৈধ বসবাসকারীরা ঘরবাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ায় নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বন সংলগ্ন দিলকুশ চাবাগান এলাকায় রাস্তার পাশে স্থানীয় লোকজন একটি চশমাপরা হনুমানের মরদেহ দেখতে পান। প্রত্যক্ষদর্শী ও বনবিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা হনুমানটি বনের ভেতরের বিদ্যুৎ লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।
বন উজাড় ও বিদ্যুতের আলোয় দিশেহারা বন্যপ্রাণীরা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করে প্রায়ই মারা যাচ্ছে। বনের মধ্যের বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়েও স্থন্যপায়ী প্রাণীরা মারা যায়। এ যেন ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃকুড়ে’প্রবাদ বাক্যের উল্টো চিত্র সরকারি ফরেস্টে।
স্থানীয়রা জানান, বনবিভাগের একোয়ার্ড ফরেস্টে এভাবে প্রায়ই তারা বানর ও চশমাপরা হনুমানের মরদেহ দেখতে পান। বানর ও হনুমান ফলজ গাছে লাফালাফির মতো বিদ্যুতের তারেও লাফালাফাতি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
বনবিভাগের বিট কর্মকর্তা সালাউদ্দিন জানান, লাঠিটিলা চশমাপরা হনুমানসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। মৃত হনুমানটিরও আবাসস্থল এ বনেই হতে পারে। বিট সংলগ্ন চা বাগানের রাস্তায় হনুমানের মরদেহ দেখে লোকজন খবর দেন। প্রাণীটির শরীরে ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। বনের ভেতর বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন রয়েছে। বিদ্যুৎ লাইনে জড়িয়ে হনুমানটির মৃত্যু হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।
বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস জানান, রিজার্ভ ফরেস্টের ভূমি দখল করে কয়েক বছর ধরে সহস্রাধিক ব্যক্তি অবৈধভাবে বসবাস করছেন। এদের অন্তত ৭০০ পরিবার অনেক আগেই বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। বনের ভূমির অবৈধ দখলদাররা ক্রমাগত বিদ্যুৎ সংযোগ নিচ্ছে। এতে বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বসবাস হুমকির সম্মুখীন।